ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রামের উপকূলীয় চার উপজেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং প্রায় ৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, চার উপজেলাসহ ১৫টি উপজেলায় নগদ অর্থ এবং ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষও সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করেছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানান, যে কোন ধরনের ঘূর্ণিঝড় কিংবা দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেয়া হয়। এবার মোখার সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিক চাহিদা মিটানোর জন্য ১৫টি উপজেলায় ত্রাণ হিসেবে চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান আশ্রয়কেন্দ্র্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রস্তুত রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলায় ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও সাইদুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, উপজেলার উপকূলীয় এলাকা ছনুয়া, খানখানাবাদ, গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, কাথরিয়া, সাধনপুর, পুকুরিয়া, পুইছড়ি, শেখেরখীল ও শীলকুপ এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার সহ ১১০টি আশ্রয় কেন্দ্র্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাগরে যে সব জেলেরা রয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৭১টি ইউনিটে এক হাজার ৪২০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় মাইকিং করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক মসজিদে কাল জুমার নামাজের বয়ানে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে বলার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সব ইমামকে বলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আনোয়ারা উপজেলার ইউএনও মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূলীয় ইউনিয়নগুলোতে এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা থাকবে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্র্র। জেলা প্রশাসন থেকে ৪০ হাজার টাকা ও ১০ মেট্রিক টন খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সচেতনতার জন্য মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে। অপরদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ৯০টি আশ্রয়য়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সদ্বীপ উপজেলায়ও আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুতি নিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকরাও।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে করনীয় নিয়ে বৈঠক করেছেন। বন্দরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে নজর রাখছে। বিপদ সংকেত ঘোষণা করা হলে প্রস্তুতি আরো জোরদার করা হবে।