ঘুর্ণিঝড় মোখা’র হাত থেকে ফসল রক্ষায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিস। এই সময় সব কৃষকের ক্ষেতে ধান থাকে। প্রকৃতিও বিরূপ আচরন করে। তাই শ্রমিক সংকট প্রকট হয়। এই পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিস কম্বাইন্ড হারভেস্টার মাঠে নামিয়েছে। এই মেশিন শ্রমিক সংকটে কৃষকের বন্ধু হিসেবে কাজ করছে।কৃষকের ধান কেটে মাড়াই ও ঝেড়ে বস্তা বন্দি করে দিচ্ছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ হামিদুল ইসলাম বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ২০ হাজার ৯’শ ২৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ১৫/২০ দিন আগে থেকেই এই উপজেলায় পাকা ধান কাটা শুরু হয়। এই পর্যন্ত ৯৫ ভাগ জমির ধান অর্থাৎ ১৯ হাজার ৮ শ’ ৮২ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষে হয়েছে। এরই মধ্যে ঝুর্ণিঝড় মোখা’র পূর্বাভাস জারি হয়েছে। ঝড়ের আগেই কৃষকের ক্ষেতের অবশিষ্ট ৫% অর্থাৎ ১ হাজার ৪৪ হেক্টরের ধান ৫টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে আমরা কেটে দিচ্ছি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঘুর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস ও শ্রমিক সংকটের মধ্যে মেশিন দিয়ে ধান কেটে, মাড়াই ও ঝেড়ে কৃষকরে ঘরে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কৃষকরা কম্বাইন্ড হারভেস্টারকে তাদের বন্ধু হিসেবে অবহিত করেছেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার হরিদাসপুর গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিন ও মনির গাজী বলেন, ধান কাটা মৌসুমে আমাদের সবার জমিতে ধান থাকে। সেই সাথে ঝড়-বৃষ্টির আশংকাতো রয়েছেই। এই পরিস্থিতিতে সদর উপজেলা কৃষি অফিস মেশিন দিয়ে আমাদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছে। এতে আমাদের খরচ ও শ্রম সাশ্রয় হচ্ছে। ঝড়ের আগেই আমাদের ধান ঘরে উঠে যাচ্ছে । কৃষি অফিস এই উদ্যোগ না নিলে আমাদের ধান ক্ষেতেই নষ্ট হওয়ার আশংকা ছিল। কৃষি অফিস আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করেছে। এ জন্য কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই। এছাড়া এখান থেকে যান্ত্রীক কৃষি কাজ সম্পর্কেও ধারণা পেয়েছি। আগামীতে আমরা যান্ত্রীক পদ্ধতিতে কৃষি কাজ করে দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখব ইনশাল্লাহ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, কৃষির যান্ত্রীকিকরণ পদ্ধতি জনপ্রিয় করতে ও প্রতিকূলতার মধ্যে কৃষকের ধান ঘরে তুলে দিতেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষি যান্ত্রীকিকরণ প্রকল্পের আওতায় আমরা ৫০ ভাগ ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করছি। কৃষি যান্ত্রীকিকরণ হলে কৃষক নিরাপদে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। এতে শ্রমিক নির্ভরতা কমবে। কম খরচে কৃষক অধিক ফসল ঘরে তুলে লাভবান হবেন। ঝড়ের আগেই কম্বাইন্ড হারভেস্টারের সহযোগিতায় শতভাগ ধান আমরা কৃষকের ঘরে তুলে দিতে পারব। আর মেশিন দিয়ে ধান ঘরে তুলতে পেরে কৃষকরা কৃষিকে যান্ত্রীকিকরণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই কার্যক্রম কৃষিকে যান্ত্রীকিকরণের আশা জাগিয়েছে।