কক্সবাজার জেলার উপকূল জুড়ে তান্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এই তান্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। তবে আঘাতের কবলে পড়েছে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, বাহারছড়া ইউনিয়ন, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ইনানী, পাটুয়ারটেক, সোনাপাড়া এলাকা। যেখানেও ব্যাপক সংখ্যক ঘর ও গাছ ভেঙ্গে গেছে।
টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম জানিয়েছেন, টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, বাহারছড়া ইউনিয়নের গাছের উপর তান্ডব চালিয়েছে মোখা। এসব এলাকার ৩০ শতাংশ গাছ ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া বহু ঘর ভেঙ্গে গেছে।
এর সংখ্যা নির্ধারণে কাজ চলছে মন্তব্য করে নুরুল আলম জানান, সেন্টমার্টিন বাদ দিলে টেকনাফ উপজেলায় আরও কম হলেও এক হাজার ঘর ভেঙ্গে গেছে।
বেশকিছু গাছ ও ঘর ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, প্রাথমিক তথ্য মতে ব্যাপক সংখ্যক গাছ ভেঙ্গে গেছে। জেলায় ১২ হাজার ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। যার মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ঘর ২ হাজারের বেশি। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন মিলে ক্ষতির পরিসংখ্যা নির্ধারণে কাজ শুরু হয়েছে। তবে এর সঠিক চিত্র পেতে সময় লাগবে। একই সঙ্গে জোয়ারের পানিতে নতুন করে বেড়িবাঁধের কিছু এলাকাও ভেঙ্গে গেছে বলে জানা গেছে। তা নির্ধারণেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করেছে।
কক্সবাজারস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানিয়েছেন, কক্সবাজারে ৫৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ৩২ কিলোমিটার অরক্ষিত ছিল আগে থেকেই। এই ৩২ কিলোমিটারের বাইরে কোন অংশে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিনা দেখা হচ্ছে।
তিনি জানান, মোখা যতটুকু আঘাত আনার কথা তা হয়নি। তার কারণ আঘাত আনার সময়টি ভাটা এবং পূর্ণিমা-অমাবস্যার মধ্যে সময়কাল। তার সাথে ঢেউর বিপরীত দিকে বাতাসের দিক হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা কমেছে।
কক্সবাজার আঞ্চলিক আবহাওয়া কার্যালয়ের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, রবিবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারে ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। এরপর বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েছে।
এদিকে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া তিন লাখ মানুষ বিকাল ৫ টা থেকে আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে ফিরে যেতে শুরু করেছেন। যদিও কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের প্রধান বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, এত দ্রুত আশ্রয় কেন্দ্র না ছাড়ার জন্য বলা হয়েছে। পরিস্থিতি আরও উন্নত হলে এদের ঘরে পৌঁছে দেয়া হবে।