শখের বসে কবুতরের খামার করে সফল সাঁথিয়ার বরকত আলম

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৩, ১৭:১৪ | অনলাইন সংস্করণ

  খালেকুজ্জামান পান্নু, সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি

শখের বসে কবুতর পালন শুরু করেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা বরকত আলম। আর এ শখই এখন রুপ নিয়েছে বাণিজ্যিক খামারে। বর্তমানে যা থেকে মাসে প্রায় অর্ধলাখ টাকা উপার্জন করছেন তিনি।

খামারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই কবুতর পালনের শখ ছিল উপজেলার করমজা গ্রামের বরকত আলমের। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে সময় হয়ে উঠেনা তার। তিনি সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। পাঁচ বছর আগে তাঁর ইচ্ছে আরও দৃঢ় হয়ে উঠে। তাই তিনি নিজ বাড়ির আঙ্গিনাতে একটি আধা-পাকা ঘর তৈরি করে লোহার খাচায় বিভিন্ন প্রজাতির কবুতরের খামার তৈরি করেন। শুরুতেই মাত্র আট জোড়া কবুতর দিয়ে শুরু করেন। এদের মধ্যে ছিল জারমানশিল, হেলমেট, এমেরিকান করমোনা, নান, মাফেট হেলমেট, শেখ শারলি প্রজাতির কবুতর। বর্তমানে তার খামারে একশত তিন প্রজাতির কবুতর রয়েছে। কবুতরগুলোর মধ্যে রয়েছে এমেরিমান মডেনা, এজিভীসন, ড্রাগন, মারট্রেক, মনডিয়ান, ট্রেচার, বিউটি জার্মান, ড্রেনিস পাকিস্থান, ইরানি টরি। এছাড়াও বেলজিয়াম, চুইনা, মার্কসি, জিরাগলা, সবুজগলা, লালগলা, বেনারস, রেচার, গিরিজেল, বারহুমাসহ অন্যান্য প্রজাতির কবুতর রয়েছে তার। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই নিয়মিত দেয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র ও খাবার। 

এদিকে, বরকতের খামারের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে পাবনা জেলার বিভিন্ন এলাকা ও আশপাশের জেলা থেকেও কবুতর প্রেমীরা ছুটে আসেন তার খামারের দামী কবুতর ক্রয়ের জন্য। খামারে প্রজাতী ভেদে প্রতি জোড়া কবুতরের বর্তমান বাজার দর ১৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার  টাকা। তার খামারে ১৮ থেকে বিশ লাখ টাকার কবুতর আছে বলে জানা গেছে। বরকত আলম চলতি বছর উপজেলা প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনীতে ১ম স্থান অধিকার করে।

ব্যবসায়ী বরকত আলম বলেন, অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি কবুতরের খামার করেছি। আমার খামারের কবুতরের খাবার পানি দেওয়া ও দেখ ভালের জন্য মাসিক বেতনভুক্ত দুইজন কর্মচারী রাখা হয়েছে। কবুতর পালন করে অল্প পুঁজিতে অতি সহজেই বেকারত্ব দূর করা যায়। অন্যান্যরাও আমার মতো খামার করে সফল হতে পারেন। 

তিনি আরও বলেন, প্রতি মাসে সকল খরচ বাদ দিয়ে ৫০ হাজার টাকার মত আয় থাকে তার। তবে গত তিন মাসে কবুতরের খাদ্যসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় অল্প কিছু কবুতর বিক্রি করে দিয়েছেন।  

সাঁথিয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার মো. ফারুক হোসেন জানান, তথ্য অনুযায়ী, সাঁথিয়া উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১০০ টি কবুতরের খামার রয়েছে। এছাড়াও অনেকের বাড়িতেই কমবেশি কবুতর পালন হয়ে থাকে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস থেকে খামারীদের চিকিৎসাসহ সকল পরামর্শ দেয়া হয়। সম্প্রতি প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনীতে ১ম স্থান অধিকার করেন বরকত আলম। 

স্থানীয়রা বরকত আলমের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তার কবুতর পালন দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক বেকার যুবক।

করমজা ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হোচেন আলী বাগচি বলেন, কবুতর পালন অনেক শখের বিষয়। বরকত আলমের মতো অন্য বেকার যুবকরাও কবুতর পালনে এগিয়ে আসলে স্বাবলম্বী হতে পারবে। এছাড়া এতে তারা মাদক থেকেও দূরে থাকবে।