স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বর্তমান সরকার আত্নসমর্পণকারী চরমপন্থীদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আইনগত সহযোগীতাসহ স্বাভাবিক জীবনযাপন করার প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করা হবে।
রোববার দুপুরে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এলাকায় র্যাব-১২ সদর দপ্তরে আয়োজিত পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) লাল পাতা ও সর্বহারাসহ বেশ কয়েকটি চরমপন্থী দলের ৩ শতাধিক সদস্যের অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে আসার আগে আমাকে বলেছেন, আপনারা যারা আজ আত্মসমর্পণ করে আলোর পথে ফিরে আসছেন তাদের আর্থিক সহযোগিতাসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। আপনারা জানেন ৮০'র দশক থেকে এই এলাকার কয়েকটি জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থাা খারাপ থাকায় সর্বহারা ও চরমপন্থীরা ঘাঁটি তৈরি করে। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ‘সন্ত্রাসের জীবন ছাড়ি, আলোকিত জীবন গড়ি’ স্লোগানে সর্বহারা চরমপন্থীরা আলোর পথে ফিরে আসে। কেউ যদি মনে করেন আমরা দুর্গম এলাকায় বসে অপরাধ করবো। আর আমাদের কেউ ধরতে পারবে না তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। তাদের আলোর পথে ফেরাতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থাানের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। আপনারা জানেন প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকেও দস্যু মুক্ত ঘোষণা করেছেন। র্যাব নানাবিধ ভালো কাজ করে আস্থাা অর্জন করেছে। এ জন্যই চরমপন্থীরা আত্মসমর্পণের জন্য র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। র্যাব আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি মাদক ও সন্ত্রাস নির্মুলে কাজ করে যাচ্ছে। উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলের সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকার চরমপন্থী ৩ শতাধিক সদস্য ২ শতাধিক অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারদসহ এ অনুষ্ঠানে আত্নসমর্পন করেন।
তাদের অন্ধকার থেকে আলোতে ফেরাতেই র্যাবের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থাায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, পুলিশ মহা-পরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিআইডি (রাজশাহী রেঞ্জ) মো: আব্দুল বাতেন, র্যাব-১২ অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মারুফ হোসেন, তানভীর শাকিল জয় এমপি, অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি, ডা. আব্দুল আজিজ এমপি, তানভীর ইমাম এমপি, মেরিনা জাহান কবিতা এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কে.এম হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার, জান্নাত আরা হেনরীসহ র্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন করেন এবং পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। এ সময় পুলিশের আইজিপি, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকসহ জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিাত ছিলেন।
