জাল দলিল বানিয়ে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট প্রতারণার মাধ্যমে দুই ব্যক্তির কাছে বিক্রির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের সিরাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইন উদ্দিন পলাশকে (৫৩) গ্রেফতার করেছে ঢাকা পুলিশের মিরপুর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।
সোমবার (২২ মে) দুপুর ১টার দিকে তাকে ঢাকার সিএমএম কোর্টে সোপর্দ করে ডিবি পুলিশ। এর আগে, গত শনিবার রাত ৯টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের মাজনদীঘি এলাকা থেকে ঢাকা মিরপুর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)কার্যালয়ের সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করে।
ভুক্তভোগী শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিবিজনেস এন্ড মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.মো.গোলাম রাব্বানী বলেন, ঢাকার কাফরুল এলাকার বিজয় রাকিন সিটির বিল্ডিং নং-বি-৩,টাওয়ার টি-৪, ফ্ল্যাট নং-৮,২, সেকশন,১৫ডি ১৬৭৮ বর্গফুটের ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাল্ট জাল দলিলের মাধ্যমে দুইজনের কাছে বিক্রি করে মাইন উদ্দিন পলাশ। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার ৯ মে ঢাকার কাফরুল থানায় আমি বাদী হয়ে মাইনউদ্দিন পলাশসহ তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। পরে এ ঘটনায় তদন্তে নামে ডিবি পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিজয় রাকিন সিটিতে পলাশের একটি বিক্রয় যোগ্য ফ্ল্যাট ছিল। এ ফ্ল্যাট ক্রয় করতে গত বছরের ১জুলাই গোলাম রাব্বানী বায়না বাবদ পলাশকে ৫০ লক্ষ টাকা দেয়। তারপর পে অর্ডারের মাধ্যমে আরও ৫৫লক্ষ টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ব্যাংক ৯০ দিনের মধ্যে ব্যাংকের অনুকূলে নামজারিও মর্টগেজ অনুমোদন পত্র জমা প্রদান করতে বলে। চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ফ্ল্যাটের ক্রেতা রেজিস্ট্রেশনের হুবহু নকল কপি উত্তোলন করে। গত ১২ এপ্রিল ভূমি অফিসে ড.গোলাম রাব্বানী নামজারি করতে গেলে অফিস থেকে তাকে জানানো হয় ফ্ল্যাটটি আসামি মাইনউদ্দি আগেই এনামুল হক নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেছেন এবং নাম জারি করেছেন।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, আসামি মাইন উদ্দিন পলাশ তার চক্রের মাধ্যমে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পুনরায় ফ্ল্যাটটি ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে বাদীর কাছে রেজিষ্ট্রি মূলে বিক্রি করেছে। আসামি বাদীকে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ অফিসের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সরকারি ফ্রি জমা গ্রহণ করে জাল মিথ্যা কাগজ তৈরী করে বাদীকে দেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মাইন উদ্দিন পলাশ এক সময়ের ঢাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানের ক্যাশিয়ার ছিলেন। ওই সময় সে নামে বেনামে বিপুল সম্পত্তি গড়ে তুলে। পিচ্চি হান্নানরে পতন হলে সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে চলে আসেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সে নিজেকে সরকার দলের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে নেয়।
মিরপুর ডিবির এডিসি মো.সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামিকে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড.মো.গোলাম রাব্বানীর করা প্রতরণার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ঢাকার সিএমএম কোর্টে সোপর্দ করা হয়েছে।