অবৈধ সম্পর্কে প্রতারণা করায় নাসরিনকে হত্যা

প্রকাশ : ২২ মে ২০২৩, ২২:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ

  নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

মাজারে বাউল গান শুনতে গিয়ে ফেরার পথে একে অপরের সাথে পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে তারা তিনজন একসাথে বসে চা পান করেন। এক পর্যায়ে অর্থের বিনিময়ে তাদের সাথে একজন নারী একান্তে সময় কাটানোর প্রস্তাবে রাজী হন। কিন্তু পরবর্তীতে একান্তে সময় কাটাতে গিয়ে সবকিছু খোয়াতে হয়। আর এই প্রতারণার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে নারীকে হতাকান্ডের শিকার হতে হয় সাথে সাথে থাকা দুইজন পুরুষের দ্বারা।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নাসরীন আক্তার (৪০) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মো. কমল ওরফে কুদ্দুস (৩৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (২২ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন। সেই সাথে এই ঘটনায় জড়িত অভির উদ্দিন (৩৫) কে গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।

এর আগে গত ১৯ মে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার সীমা ড্রাইংয়ের সামনে থেকে নাসরিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিলো। পরে এই ঘটনায় নাসরিনের বাবা আশরাফ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি ক্ললেস হলেও পরবর্তীতে মামলাটির রহস্য উদঘাটন করে মো. কমল ওরফে কুদ্দুসকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার আসামী কমল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ জালকুড়ি এলাকার পাংখা শাহ মাজারে সাপ্তাহিক ওরশে গান শুনতে গিয়ে ফেরার পথে নাসরিন আক্তারের সাথে পরিচয় হয় কমল ও অভির উদ্দিনের। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে তারা একসাথে বসে চান পান করেন। এক পর্যায়ে অর্থের বিনিময়ে কমল ও অভির উদ্দিনের সাথে একান্তে সময় কাটানোর প্রস্তাবে রাজী হয়ে যান নাসরিন। সেই সাথে একান্তে সময় কাটানোর জন্য কমল ও অভির উদ্দিন নাসরিনকে নিয়ে এক জরাজীর্ণ পরিত্যাক্ত ঘরে প্রবেশ করেন।

এরই মধ্যে নাসরিনের মোবাইলে কল আসলে তিনি কথা বলতে বলতে বেরিয়ে যান। এসময় দুইজন লোক ঘরে প্রবেশ করে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাথে টাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় কমল ও অভির উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে পরবর্তীতে আবারও বেশি টাকার লোভ দেখিয়ে জালকুড়ির খালপাড় বালুর মাঠ এলাকায় নিয়ে যায়। সেই সাথে নাসরিন আক্তার ঘটনাস্থলে পৌছার সাথে সাথেই তার হাত বেঁধে গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, এটি একটি ক্লুলেস মামলা ছিলো। পরবর্তীতে আমাদের পুলিশ সদস্যরা মিলে মামলাটির রহস্য উদঘাটন করেন এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করেছেন। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামীকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আমীর খসরু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) চাইলাউ মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মো. তরিকুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান সহ পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।