ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে এক বাড়ির তিন পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ওই তিন পরিবার গত ৫ দিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। রাস্তা বন্ধ করায় আশেপাশের আরও পাঁচ বাড়ির ১৪ পরিবার দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ফলে ছয় বাড়ির ১৭ পরিবারের চলাচলে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁশের বেড়া। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঈশ্বরগঞ্জ থানা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। বিষয়টি সমাধানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে অবরুদ্ধ পরিবারসহ ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, উপজেলার পৌর এলাকার কাকনহাটি গ্রামে মো. বাচ্চু মিয়া (৪৩) ও তাঁর ভাইয়েরা বসবাস করেন।
লিখিত অভিযোগে বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘আমাদের বসত বাড়ির পশ্চিম পার্শ্বে আমার পৈত্রিক সম্পত্তির উপর রাস্তা নির্মাণ করে উক্ত রাস্তা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বাড়িতে চলাচল করি। আমাদের বসতবাড়িতে চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি অহেতুক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত ২৬ মে (শুক্রবার) বিকেলে তারা আমার বসতবাড়ির পশ্চিম পার্শ্বে চলাচলের রাস্তায় বেড়া দেয়। এসময় আমরা তাদের বাঁধা-নিষেধ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে এবং মারধর করতে উদ্যত হয় । তারা এও বলে যে, রাস্তা দিয়া চলাচল করলে আমাদেরকে খুন করে ফেলবে। এমতাবস্থায় অনেক দুর্ভোগ ও আতঙ্কে রয়েছি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা এখন পড়াশোনা করতেও বের হতে পারছে না।'
এঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- একই গ্রামের মৃত নূর হোসেনের ছেলে মোঃ ফজলুর রহমান (৬০), মোঃ ফজলুর রহমানের ছেলে মোঃ সোহাগ মিয়া (২৮), মোঃ রহিছ উদ্দিন (৬২), মোঃ আসব আলী (৫৫), মোহাম্মদ আলী (৪৫), মোঃ চাঁন মিয়া (৫৬), মোঃ এখলাছ উদ্দিন (৫০)।
প্রতিবেশী মো. আ. কুদ্দুস (৪০) ও মোছা. চায়না বেগম বলেন, আমরাও এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। রাস্তা আটকানোর কারণে আমরা এখন ক্ষেত দিয়ে আসা-যাওয়া করি। এতে আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে ফজলুর রহমান বলেন, ‘তাঁরা আগে আমাদের পারিবারিক কবরস্থানের ওপর দিয়ে বের হতো। কিন্তু আমরা আমাদের কবরস্থানের ওপর দিয়ে আর বের হতে দেব না। বাচ্চু মিয়াদের সঙ্গে আমাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে।’
ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি আসলে তাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ। উভয়পক্ষকে নিয়ে বেশ কয়েকবার আমি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোন পক্ষই সমঝোতায় আসেনি।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। যাতায়াতের পথ বন্ধ করে রাখা যাবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’