আবুধাবিতে গভীর রাতে একটি ফার্নিচার দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে তিন যুবক আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। নিহতদের সবার বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায়। তাদের মৃত্যুর সংবাদে পরিবারে বইছে শোকের মাতম।
নিহতরা হচ্ছেন ফার্নিচার দোকান ব্যবসায়ী মো.ইউছুফ (৪৩), তিনি উপজেলার পলতি গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের-মহব্বতের নেছা দম্পতির ছেলে। দোকান কর্মচারী মো. রাসেল (৩২), তিনি মতৈন গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াহাব-শরীফা বেগম দম্পতির ছেলে এবং অপর জন হচ্ছেন পলতি গ্রামের মীর আহাম্মদ-পেয়ারা বেগম দম্পতির ছেলে।
আবুধাবির স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ মে) দিনগত রাত তিনটার দিকে দেশটির সারজা এলাকায় এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
সেনবাগ থানার ওসি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারি ও নিহত ফার্নিচার দোকান ব্যবসায়ীর বড়ভাই ডাক্তার মো.রসুল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ব্যবসায়ী মো.ইউছুফ এর বড় ভাই মো. রসুল বলেন, তার ছোট ভাই দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে আবুধাবিতে প্রবাস জীবনযাপন করে আসছিলেন। গত দুই বছর আগে তিনি আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সারজা এলাকায় একটি ফার্নিচার ব্যবসা (সোফা তৈরী-বিক্রির ব্যবসা) শুরু করেন। গত পাঁচ বছর আগে তিনি সর্বশেষ বাড়ি এসেছিলেন। তার সংসারে স্ত্রী নুরনাহার বেগম, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বড় ছেল মাইনুল ইসলাম মিলন(২০) ও ৫ম শ্রেনীর ছাত্র মেহেদী হাসান সিফাত রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার রাতে দোকান বন্ধ করে ভিতরে ইউছুফ, দোকান কর্মচারী রাসেল ও বেড়াতে আসা মো. তারেক হোসেন ঘুমিয়ে পড়েন। আবুধাবীর স্থানীয় সময় রাত তিনটার দিকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে দোকানে আগুনের সূত্রপাত হলে দোকানের ভিতরে ঘুমের মধ্যেই তিনজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। মঙ্গলবার সকালে আবুধাবিতে বসবাসরত ইউছুফের স্বজন আবুল বাশার ও আনোয়ার হোসেন মোবাইল ফোনে কল করে তাদের মৃত্যুর খবর দেন। মৃত্যুর সংবাদ শুনে তিন পরিবারে কান্নার রোল পড়ে যায়। পরিবারগুলোর দাবি নিহতদের মরদেহ যেন দেশের বাড়িতে পাঠায় যাতে করে শেষ বারের মত তাদেরকে একবার দেখতে পান।
ওসি মো. ইকবাল হোসেন পাটোয়ারি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মৃত প্রবাসীদের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিচ্ছে পুলিশ।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুর রহমান বলেন, তিনি এ ঘটনা শুনেছেন, তবে খোঁজ-খবর নিয়ে জানাবেন।
সেনবাগ-সোনাইমুড়ি আসনের সংসদ আলহাজ মোরশদ আলম ও সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং সাধারন সম্পাদক লায়ন জাহাঙ্গীর আমল মানিক এ ঘটনায় নিহতদের পরিবার পরিজনকে সমবেদনা জানান এবং আল্লাহর দরবার তাদের জান্নাত কামনা করেন। পরিবারের দাবী অনুসারে লাশ দেশে আনতে সরকারের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।