পিরোজপুরের মাদ্রাসা ছাত্র তানভীর আহসান সাকিব হত্যা মামলায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মুহাঃ মহিদুজ্জামান আসামীদের উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন।
যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সদর উপজেলার একপাই জুজখোলা গ্রামের খলিল মোল্লার পুত্র দুলাল মোল্লা, কদমতলার বাসিন্দা মৃত ওহাব মোল্লার ২ পুত্র সাইদুল ইসলাম ওরফে সায়েদ শেখ ও মোঃ শহিদুল ইসলাম এবং একই এলাকার আলম শেখ এর পুত্র বেল্লাল শেখ। আদালতে মামলার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় হাফিজ শেখ ও আনিস শেখকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৬ মে সদর উপজেলার কদমতলা গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের পুত্র পিরোজপুর ফাযিল মাদ্রাসার ১০ম শ্রেনীর ছাত্র তানভীর আহসান সাকিব ছাত্রলীগের কমিটি গঠন ও পিকনিকের জন্য গণসংযোগ শেষে বন্ধু-বান্ধবসহ পোরগোলা থেকে ৪ থেকে ৫টি মটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত আনুমানিক ৯টার দিকে পথিমধ্যে একপাই জুজখোলার ধোপাবাড়ি ব্রিজের উপর পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই ওত পেতে থাকা ১০ থেকে ১২ জন দৃষ্কৃতকারী তাদের উপর হামলা চালিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। এ ঘটনায় সাকিব, তার বন্ধু আকাশ ও সিয়াম রক্তাক্ত জখম হয়। সঙ্গীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুতর আহত সাকিবের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানে অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে ঢাকায় রেফার্ড করা হলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত সাকিবের মা দেলোয়ারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা (জিআর ৯০/১৭, থানার মামলা নং-০৫, তারিখ-০৬-০৫-২০১৭) দায়ের করে। পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করে।
এর আগে সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। আদালত উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক, মামলার পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিচার বিশ্লেষণ শেষে এই রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট ফারুক আহম্মেদ সরদার এবং আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট আহসানুল কবির বাদল মামলা পরিচালনা করেন।
