জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে ছদ্মবেশে র্দীঘ ২০ বছর আত্মগোপনে থাকার পরও শেষ রক্ষা হলো না ধর্ষক আব্দুল হামিদের (৪০)। নেত্রকোণার চাঞ্চল্যকর অপহরণসহ শিশু ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী আব্দুল হামিদকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১৪, সিপিএসসি, ময়মনসিংহ এর একটি চৌকস অভিযানিক দল। ময়মনসিংহ কতোয়ালী থানা এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-১৪ এর সিনিয়র এ এস পি সবুজ রানা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের বাড়েঙ্গা গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের পুত্র আ: হামিদ একই গ্রামের ভিকটিম রোজিনা বেগমের বড় বোনকে বিয়ে করে। বিয়ের কয়েক বছর পর হামিদ তার শ্যালিকা রোজিনা বেগমকে ২০০৩ সালের ৪ আগষ্ট স্কুল থেকে বাড়ীতে নিয়ে আসার কথা বলে কৌশলে একটি গাড়ীতে উঠিয়ে অপহরণ করে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে একটি পরিত্যক্ত বাড়ীতে তিন দিন আটক রেখে একাধিক বার ধর্ষণ করে এবং এক পর্যায়ে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে বাড়ীতে ফিরে আসে আব্দুল হামিদ। পরবর্তীতে ভিকটিম রুজিনা স্থানীয়দের সহায়তায় তার বাড়ীতে এসে বিষয়টি পরিবারের লোকজনকে জানায়। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারে রোজিনার মা বাদী হয়ে জামাতা আব্দুল হামিদকে একমাত্র আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পূর্বধলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, ঘটনার পর বিষয়টি জানাজানি হলে আব্দুল হামিদ বাড়ী থেকে পালিয়ে যায় এবং তার আসল নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে জাতীয় পরিচয়পত্রে ছদ্মনামে ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানা এলাকায় বসবাস করতে থাকে।
অপরদিকে নেত্রকোণা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ২০১২ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩ এর ৯ (১) ধারার ধর্ষনের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামী আব্দুল হামিদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং অপহরণ করার অপরাধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় অতিরিক্ত আরো ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় আসামী পলাতক ছিলেন।
র্যাব বুধবার দুপুরের দিকে গ্রেফতারকৃত আব্দুল হামিদকে আদালতে সোপর্দ করার নিমিত্তে পূর্বধলা থানায় হস্তান্তর করেছে।