ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ন্যায়পরায়ণ ও দায়িত্বশীলতার অনন্য নজির ডিসি অঞ্জনা মজলিশ 

ন্যায়পরায়ণ ও দায়িত্বশীলতার অনন্য নজির ডিসি অঞ্জনা মজলিশ 

জেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ও অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ সরকারী কর্মকর্তার পদ জেলা প্রশাসক। অধিক লোকে চেনে ডিসি হিসেবে। হাজারো দায়িত্ব এই পদের অধিকারীর। দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে অসীম হিমসিম খেতে হয় তাঁকে। তাঁর চোখ-কান রাখতে হয় চব্বিশ ঘন্টাই খোলা। অতি-ব্যস্থতার কারণে বাইরের দিকটা তাঁর দেখাই হয়ে ওঠে না। ফলে, সাধারণস্তরের খুব কম সংখ্যক মানুষই তাঁকে চেনা-জানার সুযোগ পায়। এক্ষেত্রে ব্যতীক্রম ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশ। তাকে চেনে নেত্রকোণা জেলার সবাই। চেনে তাকে সৎ, সাহসী, মানবিক ও পূর্ণ-দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা হিসেবে।

অঞ্জনা খান মজলিশ চাঁদপুরের ডিসি ছিলেন। তিনি ২০২২ খ্রিষ্ঠাব্দের ১জুন নেত্রকোণায় যোগদান করেন। সে হিসেবে নেত্রকোনায় ৩১মে তাঁর একবছর পূর্তি হয়েছে। এমন কোন পর্যায় (পিরিয়ড) অতিতে পালিত হতো শুধুই অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে। এবার তার ব্যাপ্তী ঘটেছে যেন জেলার সর্বত্র সবার মাঝে। ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশের প্রশংসায় সয়লাভ নেটিজেনদের ফেসবুক ওয়াল। অনলাইন, এমনকি কোন কোন পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সানেও তাঁর কার্যক্রমের বিস্তর প্রশংসা করা হয়েছে।

সাধারণত ডিসির কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও মূল্যায়ন সমাজের উচ্চস্তরেই সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু, ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশের কাজের মূল্যায়নে শরিক সবাই। ইহা তাঁর প্রতি মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা। প্রশাসনের কাজে গতিশীলতা বৃদ্ধি, বিভিন্ন দপ্তরে কর্মী নিয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, সেবাদানে আন্তরিকতা, গণশুনানী গ্রহণ, সম্ভাব্যক্ষেত্রে সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উন্নত নৈতিকতার চর্চায় উৎসাহীতকরণ, দূর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোরতা প্রদর্শন এবং ন্যায় বিচার ও সু-শাসন প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভ‚মিকা রেখে তিনি জেলার সকলস্তরের মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছেন।

ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশের ব্যাপক পরিচিতি ও সাধারণের ভালোবাসা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে গণশুনানী। অতীতে কোন ডিসি এমনটা করেছেন বলে তথ্য পাওয়া যায় না। ব্যতীক্রম ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশ প্রতি বুধবার গণশুনানী গ্রহণ করেন। এই দিনভর তিনি অতি দরদ দিয়ে সকলের সুখ-দুঃখ-সমস্যার কথা শোনেন। অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানেরও ব্যবস্থা করেন।

মোহনগঞ্জ উপজেলার বিপদগ্রস্থ নারী কল্প রায় (ছদ্ম নাম) বলেন, ডিসি স্যার খুব ভালো। বিপদে পড়ে স্যারের কাছে গেছি। আমার কথা শুনে স্যার সাথে সাথে সাহায্য করছেন। বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, স্যারের কাছ থেকে কেউ খালি হাতে ফিরে না। যেই যায়, স্যার তার কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনেন। তাকে সাহায্য করেন। তিনি আরো বলেন, উপজেলার প্রেমনগর গ্রামের মুক্তি বর্মন নামের দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী পড়া-লিখার পাশাপাশি দরজির কাজ করে কিছু টাকা আয় ও নিজের পরিবারকে সাহায্য করতো। সম্প্রতি এই মেয়েটি প্রকাশ্য দিনের বেলা বখাটের দায়ের কোপে নিহত হয়। ফলে পরিবারটির আয় হ্রাস পায় এবং তাদের অতি কষ্টে দিন কাটে। এই কথা শুনার সাথে সাথে নিহত মুক্তির বড় বোনের চাকুরীর ব্যবস্থা করেন ডিসি স্যার।

ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশের উল্লেখযোগ্য অন্যান্য কাজের মধ্যে অন্যতম সরকারের ৫৬ কোটি টাকা ব্যয় হ্রাস। এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মাচারী নেত্রকোণা-ঠাকুরাকোণা-কলমাকান্দা সীমান্ত-সড়কের ভূমি অধিগ্রহণের নামে এই পরিমাণ টাকা আত্সানতের ফন্দি এঁটেছিল। জানতে পেরে ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশ তাঁর বক্তিগত তত্বাবধানে সড়কের জমির পূণঃসার্ভে করান। ফলে ভ‚য়া ও বেনামী জমি বাদ পড়ে এবং সরকারের উল্লেখিত ৫৬ কোটি টাকা রক্ষা পায়। এই ঘটনা দেশে ভ‚মি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক বলে মনে করেন শুশীল সমাজ।

নেত্রকোনা,ডিসি,মজলিশ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত