ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে প্রস্তুত ৪ লাখ কোরবানির পশু

প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৩, ১৮:০২ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক,সিরাজগঞ্জ

ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে কোরবানির পশু মোটাতাজা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে খামারিরা। ইতিমধ্যেই এ পশু বিক্রির শুরু হচ্ছে সংশ্লিষ্ট হাট-বাজারে। তবে দাম চড়ায় এখন তেমন কেনাবেচা হচ্ছেনা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার জেলার ৯টি উপজেলায়  প্রস্তুত রাখা হয়েছে  প্রায় ৪ লাখ কোরবানির পশু। এরমধ্যে ১ লাখ ৭২ হাজার ৭১২টি গরু ও ১ লাখ ৬০ হাজার ছাগল রয়েছে। বাকি পশুগুলোর মধ্যে রয়েছে মহিষ ও ভেড়া।

বিশেষ করে শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, এনায়েতপুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে এসব পশুকে ঘাস, খড়, বিভিন্ন প্রকারের ভুসি, ডালের গুঁড়া, খৈলসহ দেশীয় পদ্ধতিতে ষাঁড় মোটাতাজা করা হচ্ছে প্রায় ৬ মাস ধরে। তবে শাহজদুপর ও উল্লাপাড়া অসংখ্য গো-খামার রয়েছে।

এসব খামারে কোরবানির গরু পরিচর্যা ও মোটাতাজা  করছে কৃষকেরা। জেলার অনান্য উপজেলার গ্রামঞ্চলে ছোট খাট খামারে পরিচর্যা ও মোটাতাজা করছে নারী পুরুষ। খামারে রক্ষিত ষাঁড় গরুগুলোকে পরিমিত খাবার, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি পরিচর্যার মাধ্যমে গরু স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠছে।  এছাড়া অধিক লাভের আশায় পশুর লালন পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারি ও প্রান্তিক কৃষকেরা। জেলার চাহিদার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদা প‚রণ করে এখানকার গবাদি পশু। 
এ অঞ্চলে গো-খাদ্যের চড়া দামে ছোটখাট খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এজন্য তারা ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু আমদানি বন্ধের দাবি জানান। লাভে গরু বিক্রি করতে না পারলে খামারিদের লোকসান গুনতে হবে।

তবে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কোরবানির পশুর দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এবার জেলার ৯ টি উপজেলায় প্রায় ১৭ হাজার ছোট বড় খামারি বিভিন্ন প্রজাতির গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা মোটাতাজা করা হচ্ছে। এতে প্রায় ৪ লাখ গবাদিপশু মোটাতাজা করা হয়েছে। এ জেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা ১ লাখ ৬০ হাজার। এ চাহিদা মিটিয়ে ২ লাখ ২৬ হাজার ৩৯৬টি পশু দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাবে ঈদের আগেই। এসব পশু মোটাতাজাকরণে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক খাবার যাতে ব্যবহার না করে এজন্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। এবার জেলায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মোটাতাজা করা পশু কেনা কাটার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

স্থানীয় খামারিরা বলেন, কোরবানির ঈদে তারা এসব গবাদিপশু বিক্রির মাধ্যমে বাড়তি আয় করবে। খামারিরা নিজ বাড়ি ও খামারে বছর জুড়ে গবাদি পশুগুলো লালন পালনের মাধ্যমে  মাটাতাজা করে থাকে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান জানান, এ উপজেলায় গো-খামারের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। খামারিদের গো-খাদ্যের চাহিদা মেটাতে উন্নতমানের ঘাসের আবাদ করতে হবে।

এতে গো-খাদ্যের খরচ বেশ কমে যাবে। যেসব খামারি শুধু ভুসি, খৈল, খড়ের মতো গো-খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল তাদের গরু পালন করে এবার লাভবানের সম্ভাবনা নেই। কারণ গো- খাদ্যার সংকট ও মূল্য বৃদ্ধি ঘটছে। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার জানান, শাহাজাদপুর ও উল্লাপাড়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ ওষুধপত্র দেয়া হচ্ছে।

এবার জেলায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার  পশু কেনা বেচা হবে। জেলার প্রতিটি হাটে ব্যাংকের লোকজন থাকবে। গবাদিপশু ক্রেতা বিক্রেতারা যে কোনো ব্যাংকের এ্যাকাউন্ট এবং কিউআর কোড ব্যবহার করে ই-ব্যাংকিং লেনদেন সেবা গ্রহণ করতে পারবে। জেলায় ৩১টি স্থায়ী ও ১৭টি অস্থায়ী পশুর হাটের মাধ্যমে এসব গবাদি পশু বিক্রি করা হবে।

এছাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে পশুর ছবি আপলোড করে অনলাইনেও বিক্রি করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।