ঢাকা ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নেত্রকোণায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোচ সম্প্রদায়ের ‘বিহু’ উৎসব পালিত

নেত্রকোণায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোচ সম্প্রদায়ের ‘বিহু’ উৎসব পালিত

আমার সংস্কৃতি, আমার অধিকার, এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গারো পাহাড়ের পাদদেশ নেত্রকোণার দুর্গাপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ‘কোচ’ সম্প্রদায়ের বিহু উৎসব- ২০২৩ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পক্ষ হতে নিজেদের অডিটরিয়ামে আজ শুক্রবার (৯ জুন) বিকেলে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে ছিল অতিথিবরন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

বিকেল তিনটায় বিশেষ আনুষ্ঠানিকতায় অতিথিবরন শেষে শুরু হয় আলোচনা সভা। নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্ব ও একাডেমির শিক্ষক মালা আর্থা আরেংয়ের সঞ্চালনায় এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন

বিেিশষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নেত্রকোণার পুলিশ সুপার মো: ফয়েজ আহমেদ, দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজিব-উল-আহসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওসমান গনি তালুকদার ও সাধারন সম্পাদক মো: সফিকুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন তালুকদার, শিক্ষাবিদ ও গবেষক রেভা: মনিন্দ্র নাথ মারাক, হাজং লেখক ও গবেষক মতিলাল হাজং, লেখক ও গবেষক শরবিন্দু সরকার হাজং, কোচ লেখক ও গবেষক যুগল কিশোর কোচ, সমাজকর্মী সুশান্ত কোচ প্রমুখ।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পরিচালক গীতিকবি সুজং কুমার হাজং অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, এক সময়ের প্রভাবশালী জনগোষ্ঠী কোচ সম্প্রদায়। তারা সনাতন ধর্মের অনুসারী। তবে, তাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা, আলাদা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। কালের আবর্তে তাদের বসতি এলাকা ও লোক সংখ্যা অনেক হ্রাস পেয়েছে। ঝুঁকিতে পড়েছে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি। বর্তমান সরকার সকল সম্প্রদায়ের ইতিহাস ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই লক্ষ নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিরিশিরি কালচারাল একাডেমি।

এলাকার সমাজকর্মী অন্তর হাজং জানান, কোচ সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব ‘বিহু’। এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে বৈশাখ মাসে নববর্ষকে বরণ করে নেয় কৃষিনির্ভর কোচ সম্প্রদায়। বিহুর দিনে কোচ সম্প্রদায়ের প্রতিটি বাড়িতে চলে বিশেষ আয়োজন। এইদিন সবাই নতুন জামা-কাপড় পড়েন। মেয়েরা পড়েন তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক- ‘লেফেন’। ঐতিহ্যবাহী কাঁথামুড়ি পিঠা ও মেরা (এক প্রকার পানীয়) প্রভৃতি দিয়ে অতিথি আপ্যায়ণ করা হয়। সকলেই দিনকাটায় আনন্দ-উৎসবে। তাদের বিশ্বাস- এইদিনটি ভালোভাবে কাটলেই ভালো যাবে তাদের সাড়াটা বছর। কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসেছে এই উৎসব।

বৃৃহস্পতিবারের বিহু উৎসবের সেরা আকর্ষন ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এইপর্বে কালচারাল একাডেমির নৃত্য ও সঙ্গীত শিক্ষকের পরিচালনায় কোচ সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা নিজস্ব ঢংয়ে নেচে-গেয়ে উৎসবকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

সংস্কৃতি,অধিকার,নেত্রকোণা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত