নৌকা ও সাইকেলে প্রতিদ্বন্দিতা হবে, সহিংসতার আশঙ্কা ভোটারদের 

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩, ১৭:২৩ | অনলাইন সংস্করণ

  কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

সারা দেশের ন্যায় কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি  ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী (১৮ জুন) মনোনয়নপত্র দাখিল করে (১৭ জুলাই) ভোট গ্রহণ করা হবে। 

তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ইউনিয়নের পথে - ঘাটে অফিস ও  চায়ের দোকানে একই আলোচনা কে হবেন ইউনিয়নের নতুন চেয়ারম্যান।

আবার সহিংসতা হত্যা খুন গুলি বর্ষণ নির্যাতন ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটবে না তো  প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন তো এমন প্রশ্ন সবার  মুখে।

এই নির্বাচনে  চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দুজনার নাম আলোচিত হয়। এরা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান সিকদার মো: দেলোয়ার হোসেন ও সাবেক চেয়ারম্যান গাজী সিদ্দিকুর রহমান। 
সিকদার মো: দেলোয়ার হোসেন ইতিমধ্যেই সাইকেল প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করার টিকিট হাতে পেয়েছেন অপরদিকে গাজী সিদ্দিকুর রহমান  আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকের টিকিট  পেয়েছেন। যে কারণে এই নির্বাচনে 
পেশি শক্তি কাজে লাগাতে পারবে না ভেবে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার আগেই  দিনে রাতে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ভোট প্রার্থনা  করে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছেন । নির্বাচনে ১০হাজার ৩৭জন ভোটার ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান মেম্বার নির্বাচিত  করবেন। 

উল্লেখ্য ৫নং শিয়ালকাঠী ইউনিয়নে এর আগে ২০১৬সালের (২২ মার্চ) ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও দুইটি কেন্দ্রে    নির্বাচনে ভোটবক্স ছিনতাই,গুলিবর্ষণ, সহিংসতার অভিযোগে  দুটি কেন্দ্রের নির্বাচনের ফল স্থগিত  ঘোষণা করেছিলেন নির্বাচন কমিশন ।

পরে ঐ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে  হাইকোর্ট - সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে এসে কোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক সাধারণ নির্বাচনের দুই বছর পর পুনরায় ওই দুটি কেন্দ্রে  ২০১৮ সালে ৩ অক্টোবর  নির্বাচন  অনুষ্ঠিত হয়।সেই নির্বাচনে সাইকেল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন বর্তমান চেয়ারম্যান শিকদার মোঃ দেলোয়ার হোসেন এবং কয়েক ভোটের ব্যবধান আনারস মার্কার প্রার্থী  গাজী সিদ্দিকুর রহমান পরাজিত হন  ।

পরে  ২০১৮ সালে বিজয়ী চেয়ারম্যান   দায়িত্বভার গ্রহণ করে তিনি ১৮ নভেম্বর  প্রথম সভা করেন সেই অনুযায়ী আগামী  ১৭ ই নভেম্বর ২০২৩ তারিখ পাঁচ বছর পূর্তি হবে।
বিধি মোতাবেক  মেদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন আগামী (১৭ জুলাই) ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করেছেন।
যার ফলে শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের সর্বত্র  এখন চলছে নির্বাচনের আলোচনা।

অপরদিকে বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মানুষ ঘর ছেড়ে আড্ডা জমান বাজার কিংবা পাড়ার চায়ের দোকান গুলোতে। বিদ্যুৎ বিহীন তীব্র   গরমের সাথে সাথে নির্বাচনী আলোচনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে এখন গরম চায়ের চুমুকে চুমুকে

এমন চিত্র দেখা গেছে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে। সাধারণ মানুষের সাথে  নিয়মিত হাত মিলাচ্ছেন চেয়ারম্যান মেম্বার  প্রার্থী কিংবা তার কর্মী ও আত্মীয়-স্বজনরা।
আলোচনা একটাই  এবার নির্বাচনে  কে বিজয়ী হবেন।  তবে আলোচনার সাথে সাথে সকলের ভিতরই ভয় এবং উৎকণ্ঠা  দেখা গেছে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয় নিয়ে নির্বাচনের আগেই এই ইউনিয়নে দুটি খুন  হয়েছে। ১৬সালের নির্বাচনে সহিংসতা ব্যালট  ছিনতাই গুলির ঘটনার বিষয়গুলো এখনো সাধারণ মানুষ ভুলতে পারেনি। ফলে সকলের মধ্যে রয়েছে একটি চাপা ক্ষোভ  ও আতঙ্ক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান চেয়ারম্যানদের নিজ নিজ এলাকার কেন্দ্রগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ আগের  নির্বাচনে এলাকার লোকজনকে প্রার্থীর লোককে ভোট দেখিয়ে দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।এইবার প্রশাসনের কাছে ভোটারদের একটি দাবি তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গোপন কক্ষে ভোট দিয়ে  যেন চেয়ারম্যান মেম্বার নির্বাচিত করতে পারেন।

ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার লাগিয়ে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক ও ভয় দূর করার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ ভোটার।

এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত  নির্বাচন কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান সোহাগ হাওলাদার বলেন জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে ইউনিয়নের নির্বাচন একটি রোল মডেল হিসেবে চিন্তিত হবে। শত ভাগ  নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়া হবে। ভোটাররা নির্ভয় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন নিয়ে আশ্বস্ত করেন।