নাটোর সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু কুষ্টিয়ায় উদ্ধার

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩, ১৮:০২ | অনলাইন সংস্করণ

  নাটোর, প্রতিনিধি

নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া কন্যা শিশুকে কুষ্টিয়া থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় জড়িত দুই নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১০ জুন) দুপুরে নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার মো: সাইফুর রহমান উদ্ধার বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। এর আগে, শনিবার (১০ জুন) ভোরে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।

চুরি হওয়া শিশুটি নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের মহিষডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মো:মাহফুজুর রহমান ও মোছা. হাসনা হেনা (২৫) দম্পতির প্রথম সন্তান।

আটককৃত ছদ্দবেশী নার্স মোছা: কাজলী (৩০) শহরের চকবৈদ্যনাথ এলাকায় মো:আরিফুল ইসলামের স্ত্রী এবং মোছা. কাজলী খাতুন (৪২) কুঠিয়া জেলার খাজানগর এলাকার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী।

পুলিশ সুপার মো: সাইফুর রহমান জানান, শনিবার দুপুর ১টার দিকে সিভিল সার্জন মহোদয় আমাকে ফোন দিয়ে শিশু চুরি হবার বিষয়টি জানান। সাথে সাথে জেলা পুলিশ সার্বক্ষণিক তত্বাবধানে নাটোর থানার চৌকস অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে একাধিক টিম গঠন করা হয়।

আমরা বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজের বিশ্লেষণ করি। আমরা দেখতে পাই, নাটোর রেল স্টেশন থেকে একটি শিশুকে নিয়ে এক নারী ট্রেনে উঠেন। ট্রেনটি খুলনার দিকে যাচ্ছিলো। পরবর্তীতে আমরা সকল স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করি।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখি, শিশুকে নিয়ে ওই নারী পোড়াদহ রেল স্টেশনে নামেন। সেই সূত্র ধরে আমাদের পুলিশের টিম সারা রাত কাজ করেছে। সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পোড়াদহ থানার খাজানগর এলাকা থেকে শিশুসহ কাজলী খাতুনকে (৪২) গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে সকালে ছদ্দবেশী নার্স কাজলীকে নাটোর শহরের চকবৈদ্যনাথ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

ছদ্দবেশী নার্স মোছা. কাজলি (৩০) শিশুটি চুরি করে ৮ হাজার টাকায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর এলাকার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী কাজলী বেগমের কাছে বিক্রি করেন। এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ের পর পুলিশ সুপার মো: সাইফুর রহমান শিশুটিকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন ও অর্থ) মাইনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস্) মো: শরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন রেনি, নাটোর সদর থানার কর্মকর্তা ওসি নাছিম আহমেদ, মামলার তদন্তকারী অফিসার নাটোর থানার এসআই মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, এসআই মোঃ জামাল হোসেনসহ পুলিশ কর্তকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৯ জুন) সকালে শিশুটির দাদা ও তার মাকে হাসপাতালে রেখে বাকীরা সবাই বাড়িতে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটির দাদি ও মা হাসপাতালের বেডে সুয়ে ছিলেন। এসময় হঠ্যৎ অজ্ঞাত পরিচয়ে এক নার্স শিশুটিকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে দাদির কোল থেকে নিয়ে যায়। এসময় শিশুটির মাকে বিছানা থেকে তুলে বসাতে বলে। মুহুর্তে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যান অজ্ঞাত ওই নারী। এসময় শিশুটির দাদির চিৎকারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ  আসেন। সবাই খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানান। পরে জেলা পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযানে নামে।