পাবনার সাঁথিয়া এতিহ্যবাহী বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল গেটে লিজকৃত জমিতে পাকা ইমারত নির্মাণ করে মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং জনসাধারণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই দ্বন্দ্ব সৃষ্টির জন্য এলাকাবাসী পাবনার সাবেক জেলা প্রশাসককে দায়ী করেছেন।
সাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২সালে। ওই বছরেই (৩১ মে) কৃষ্ণলাল সাহার নিকট থেকে ৫৫০১ নং দলিল মূলে ৮২ শতাংশ জমি ক্রয় করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়ের সম্মুখবর্তী ৭ শতাংশ অর্পিত অনাগরিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিজের জন্য আবেদন করে।
কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জমি লিজ না দিয়ে ২০১৩ সালে পাবনা জেলা প্রশাসক রেখা রাণী বালো সাঁথিয়া বারোয়ারি কলিমন্দিরকে প্রদান করেন। এখান থেকেই সূত্রপাত দ্ব›দ্ব বিভেদের। জমিটি বিদ্যালয়ে ঠিক প্রবেশ পথে। আর কালিমন্দিরের অবস্থান উল্লিখিত স্থান থেকে প্রায় ৫’শ মিটার দূরে ভিন্ন স্থানে প্রধান সড়কের পাশে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং অবিভাবকদের দাবি মোট জমি পরিমাপ করে বুঝে না দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গেটের পাশে মন্দিরের পাকা ঘর নির্মাণের ফলে ছাত্রীদের চলাচল এবং লেখাপড়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হবে।
এদিকে বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনার ঘেষে মন্দির স্থাপনের প্রতিবাদে স্কুলের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা মানববন্ধন করেছে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আজিবর রহমান জানান, মন্দির কর্তৃপক্ষ সরকারের বিধিবিধান অমান্য করে বিনা অনুমতিতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে বিদ্যালয়ের মেইন গেটের পাশে শহীদ মিনার ঘেষে। মন্দির কর্তৃপক্ষ বলছেন, তারা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে ২০১৩ সালে জমিটি পেয়েছেন।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মন্দিরের নামে প্রদত্ত দলিল বা লিজ বাতিল করে উক্ত ৭ শতাংশ জমি সাঁথিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে প্রদানের দাবি জনিয়েছেন। স্কুলটি স্বাধীনতার পরপরই প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।
এ কারণে তারাও এভাবে বিদ্যালয়ের সামনের জমি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান না করে একজন জেলা প্রশাসক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মন্দিরকে প্রদান করায় ক্ষুব্ধ।
উল্লেখ্য বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার মিটিং করেও কোন সমাধান আনতে পারেনি। উপরন্তু দ্ব›দ্ব আরও ঘনিভূত হয়েছে।