নাম নেই মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও জীবন যুদ্ধে পরাজিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ

প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ১৯:৫১ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ

জীবন বাজী রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণে দেশ স্বাধীন করলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ সরকার (৬৮)। দেশ স্বাধীনের ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম থাকায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর আকুতি প্রধানমন্ত্রী যদি একটু সুদৃষ্টি দেন তাহলে জীবনের শেষ বয়সে তার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হবে এবং মৃত্যুর আগে নিজেকে শান্তনা দিতে পারবে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার কাজিপুর উপজেলার দোয়েল গ্রামের আব্দুর রশিদ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধে বেসরকারি সাব সেক্টর এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পলাশডাঙ্গা যুব শিবির থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকসেনাদের প্রতিহত ও পরাস্থ করেন। স্বীকৃতি হিসেবে পলাশডাঙ্গা যুব শিবির পরিচালক প্রয়াত সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জা কর্তৃক সনদ প্রাপ্ত হন তিনি।

শুধু তাই নয় দেশরক্ষা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী কর্তৃক স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদ যুদ্ধকালীন কমান্ডার আমির হোসেন ভুলু কর্তৃক সনদ প্রাপ্তহন এবং মহকুমা প্রশাসকের নিকট অস্ত্রজমা দেন। কিন্তু এখনও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার নাম তালিকাভুক্ত হয়নি। নিজের নাম তালিকাভুক্ত করতে ২০১৭ সাল থেকে একাধিকবার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বরাবর আবেদন করেন।

কিন্তু যাচাই-বাছাই কমিটি তার আবেদন বাতিলের তালিকাভুক্ত করায় তিনি আজও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেননি। আর সেজন্যই মিলছেনা তার ভাগ্যে কোন প্রকার রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও কেন নাম তালিকাতে নেই এমন প্রশ্ন করতেই আব্দুর রশিদ সরকার কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, নিজের জীবন বাজী রেখে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এখনও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আমার নাম নাই।

নিজের সন্তানদের কাছে পরিচয়ও দিতে পারিনা আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি। যুদ্ধকালীন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার থেকে শুরু করে সর্বশেষ স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রত্যয়ন প্রদান করলেও ৭নং সেক্টরের একজন মুক্তিযোদ্ধা হতে পারিনি।

এজন্য সরকার প্রধানের নিকট আবেদন আমার যুদ্ধকালীন সময়ের সকল প্রমাণপত্র যাচাই করে দ্রুত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হোক। এদিকে পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি মানেবতর জীবন যাপন করছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া এই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করণ এবং রাষ্ট্রীয় সকল সুবিধা প্রদানে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী।