পাবনায় কোরবানির পশু পর্যাপ্ত হলেও নেই বেচা-কেনা
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ২০:৪০ | অনলাইন সংস্করণ
পাবনা প্রতিনিধি
পাবনার হাট-বাজারে পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে কোরবানীর পশুর পর্যপ্ত যোগান থাকলেও দাম গত বছরের তুলনায় এবার বেশী। ফলে বেচা-বিক্রি এখনও জমে উঠে নাই।
গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারনে পশুপালনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ বছর কোরবানির পশুর দাম গত বছরগুলোর তুলনায় বেশি বলে জানিয়েছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। এদিকে প্রাণিসম্পদ বিভাগ দাবী করেছে, এ বছর জেলায় কোরবানির পশুর যোগান গত বছরের চেয়ে বেশি। ফলে দেশীয় পশু দিয়েই এবার কোরবানির চাহিদা মেটানো যাবে।
পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আল মামুন হোসেন জানান, এ বছর পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে পাবনায় প্রায় ১ লাখ ৭৪ হাজার গরু, ৪ লাখ ২৯ হাজার ছাগল-ভেড়া ও ৫ হাজার ৯২৫ মহিষ প্রস্তুত করা হয়েছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হবে।
বছর ছোট ও মাঝারি আকৃতির গরুর (৩ থেকে ৫ মন) মনপ্রতি দাম ছিল ২৬ থেকে ২৭ হাজার টাকা এবং বড় গরু (৫ মনের উপরে) মনপ্রতি ২৩ থেকে ২৪ হাজার টাকা।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরও জানান, খামার পর্যায়ে এ বছর ছোট ও মাঝারি আকৃতির গরু প্রতিমন ২৬ থেকে ২৭ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বড় গরু বিক্রি হচ্ছে মনপ্রতি ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকায়। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বেশী।
পাবনার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে খামারি ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপক প্রস্ততি নিয়েছেন। প্রায় প্রতিটি খামারে ছোট ও মাঝারি গরু দেখা গেছে বেশি।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত খামারি পাবনার ফরিদপুর উপজেলার পার-ফরিদপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, তার খামারে ৬৫টি গরু আছে। কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য ১০টি গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। তবে এখনো আশানুরুপ দামে ক্রেতা পাননি। এ বছর পশু পালনে খরচ বেশি হওয়ায় ছোট ও মাঝারি গরু মনপ্রতি ২৭ থেকে ২৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় গরু প্রতিমন ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এখনো পাইকাররা গরু কিনছেন না। বাইরে থেকেও ক্রেতারা তেমন আসছেন না। গরুর দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। বাজারে গরুর আমদানি বেশি থাকলেও ক্রেতাদের ভিড় নেই। অবৈধ পথে আসা বিদেশি পশু বিক্রি বন্ধের দাবি করেছেন তিনি।
পাবনা সদর উপজেলার জালালপুর পুর্বপাড়া গ্রামের খামারি আবু সাঈদ বলেন, গত বছর ২২টি গরু বিক্রি হলেও তেমন দাম পাইনি। এ বছর ছোট ও মাঝারি মিলে ২৫টি গরু পালন করেছি। তিনি জানান, এবার গো-খাদ্যের দাম বেশি। ফলে পশু পালনে খরচ কমেনি। প্রতিটি গরুর খাবার খরচ হয়েছে দেড় থেকে ২ লাখ টাকা।
পাবনার পুষ্পপাড়া হাটে গরু কিনতে আসা শহিদুল বাকী বলেন, প্রতি বছর ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধে একটা ছোট গরু কোরবানি জন্য কিনি। 'এ বছর এই টাকায় কোরবানির পশু কিনতে পারবো কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান চড়া বাজার দরে পশু কিনে কোরবানি দেওয়া কঠিন হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আল মামুন হোসেন জানান, কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি উপজেলায় আমাদের ভেটেরিনারি টিম কাজ করছে। যেকোন পশু অসুস্থ্য হয়ে গেলে জরুরি সেবা দিতে আমাদের টিম প্রস্তুত রয়েছে। পশুর হাটে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা দিতে মেডিকেল টিম রয়েছে। সন্দেহজনক গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও রোগ নির্ণয়ের পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।