ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফেনীসহ দেশব্যাপী শিশু অধিকার ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করছে ইয়েস বাংলাদেশ

ফেনীসহ দেশব্যাপী শিশু অধিকার ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করছে ইয়েস বাংলাদেশ

ফেনী জেলাসহ দেশের প্রতিটি জেলায় শিশু অধিকার বাস্তবায়ন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে ওয়াই-মুভস প্রকল্পের আওতায় কাজ করছে ইয়ুথ এনগেজমেন্ট ফর সাস্টেইনএবিলিটি (ইয়েস) বাংলাদেশসহ জাতীয় পর্যায়ের শিশু সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেন'স টাস্ক ফোর্স, এনসিটিএফ। এ প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে শিশুদের বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের অংশগ্রহণ, সুরক্ষা এবং যৌন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করা এবং শিশু অধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ তুলে ধরা।

এসব তথ্য জানিয়েছেন ইয়েস বাংলাদেশ ফেনীর জেলা স্বেচ্ছাসেবক ও মিডিয়া বিভাগের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ। আজ বুধবার (১৪ জুন)দুপুরে শহরের ক্রাউনওয়েস্ট রেস্টুরেন্টে অপরাজেয় বাংলাদেশ ও প্লান ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগিতায় ওয়াই মুভস প্রকল্পের মাধ্যমে শিশু অধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি। এতে জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ২০জন সাংবাদিক অংশ নেন।

সভায় তিনি বলেন, ওয়াই-মুভস প্রকল্পের অন্যান্য লক্ষ্যে উদ্দেশ্যর মধ্যে অন্যতম হলো স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে যৌন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যারা কাজ করে তাদের সাথে সমন্বয় এবং আলোচনার মাধ্যমে শিশু কিশোর-কিশোরীদের যৌন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি গতিশীল এবং অন্তর্ভুক্ত সুশীল সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখা। তিনি জানান, এ প্রকল্পে বাস্তবায়নে মেয়ে শিশু ও যুব মেয়েদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এতে করে তারা সমাজে লিঙ্গভিত্তিক যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে নিজেরা পরিবর্তনের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারবে এবং সমাজে যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার বাস্তবায়নে নিজেরাই কাজ করতে পারবে।

সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি আরও জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুরা যাতে নিজেদের অবস্থা পরিবীক্ষন করে প্রতিবেদন লিখতে পারে সে লক্ষ্যে ৬৪ জেলায় কাজটিকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য শিশু সংগঠন এনসিটিএফ কাজ করছে। যার মধ্যে ২ জন( ১জন ছেলে, ১জন মেয়ে) শিশু সাংবাদিক ও গবেষক রয়েছে।যাদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে। এসকল শিশু গবেষকরা নিজ এলাকার স্কুল, হাসপাতাল, ক্লিনিক, আবাস্থান ও অন্যান্য সামাজিক প্রেক্ষাপট পরিদর্শন করে নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকে গল্প লিখে।

ফেনী জেলার কার্যক্রম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইয়েস বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ফেনীতে নারী শিশুদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য ক্ষমতায় সমানে সমান প্রতিপাদ্যে আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষ্যে গার্লস টেকওভার আয়োজন করেছে। যার মাধ্যমে একজন মেয়ে শিশু এক ঘন্টার জন্য চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতীকী দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ইয়েসের আয়োজনে ফেনীতে আমরা শিশুরা কেমন আছি? শিশু অধিকার পরিস্থিতি, শিক্ষা ও বাল্যবিবাহ বিষয়ে ন্যাশনাল চিলড্রেন'স টাস্ক ফোর্স (এনসিটিএফ) ফেনীর শিশুরা ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসানের সাথে মুখোমুখি সংলাপ করেছে। যেখানে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ সহ শিশুদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে ধরে সামাধানের দাবী জানান। ইয়েস বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর শিশুদের জন্য পৃথক অধিদপ্তর গঠনের দাবীতে, কিশোরগ্যাং ও শিশুশ্রম বন্ধে, শিশুর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধে কার্যকরী প্রদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে এনসিটিএফ শিশুরা। এছাড়াও প্রতিমাসে মাসিক সভা আয়োজনের মাধ্যমে শিশুদের নেতৃত্ব বিকশিত করার পাশাপাশি জেলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড, পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ, শিশুদের নিয়ে মেহেদী উৎসব, ঈদ উপহার বিতরণ, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিসহ বছরজুড়ে নানা কর্মসূচি পালন করা হয় বলে জানান তিনি।

মতবিনিময় সভায় জেলা পর্যায়ে শিশু অধিকার বাস্তবায়নে গণমাধ্যমকর্মীরা কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে তৃণমূলে যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে তা সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগে ভূমিকা রাখা প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন সাংবাদিকরা। সাংবাদিকরা তাদের বক্তব্যে জেলা পর্যায়ে শিশু অধিকার পরিস্থিতির নানা নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, একটি জেলায় বছরে কি সংখ্যক শিশু বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে, স্কুল থেকে ঝড়ে পরছে, করোনা পরবর্তী কতজন শিশু নতুন করে শ্রমের সাথে জড়িয়ে পরেছে কিংবা তাদের পুনর্বাসনে সরকারি দপ্তরগুলো কোন ভূমিকা রেখেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান দপ্তরগুলোতে সহজে পাওয়া যায় না। শিশুর ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নে এসব তথ্য সুনির্দিষ্ট রাখার আহবান জানান তারা।

এছাড়াও সভায় হাসপাতালগুলোতে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সরকারি যে বরাদ্দগুলো আসে তার সুষ্ঠু বণ্টন ও কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে মাঠ পর্যায়ে আরো সচেতনতা সৃষ্টির গুরুত্ব তুলে ধরেন সাংবাদিকরা। ওয়াই মুভস প্রকল্পের যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রশংসা করে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি বিষয়ে আগামীতে তাদের নিজ অবস্থান থেকে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক অর্জনে ভূমিকা রাখার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।

সভায় ডিবিসি নিউজ ও ডেইলি ওভজারভারের ফেনী প্রতিনিধি আবু তাহের ভুঞা, দৈনিক নয়াপয়গাম সম্পাদক এনামুল হক পাটোয়ারী দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ প্রতিনিধি জহিরুল হক মিলন ,সময় টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি আতিয়ার সজল, যমুনা টেলিভিশনের আরিফুর রহমান,নিউজ-২৪ এর জেলা প্রতিনিধি নজির আহমেদ রতন, দৈনিক মানবজমিনের নাজমুল হক শামীম, দৈনিক ফেনীর সময়ের নির্বাহী সম্পাদক আলী হায়দার মানিক, দৈনিক বণিক বার্তার জেলা প্রতিনিধি নুরুল্লাহ কায়সার, বাংলানিউজ-২৪ এর নিজস্ব প্রতিবেদক সোলাইমান হাজারী ডালিম, দৈনিক কালবেলার জেলা প্রতিনিধি সুরঞ্জিত নাগ,

ফেনী,সেবা,অন্যতম
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত