নারায়ণগঞ্জে সংখ্যালঘু নেই, এখানে সব সমান: শামীম ওসমান
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৩, ২০:২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ অত্যন্ত সুন্দর জায়গা। বাংলাদেশে কোথাও এমনটা নেই যেখানে পাশাপাশি কবরস্থান, শ্মশান ও খ্রীষ্টানদের কবরস্থান। আমাদের শেষ ঠিকানা এক জায়গায়। নারায়ণগঞ্জে সংখ্যালঘু নেই। নারায়ণগঞ্জে সব সমান।
শুক্রবার (২৩ জুন) নারায়ণগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শামীম ওসমান আরও বলেন, আমরা যখন রাজনীতিতে আসি তখন স্লোগান কি ছিল। তখন স্লোগান ছিল তুমি কে আমি কে বাঙালি বাঙালি, বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো বাংলাদেশ স্বাধীন করো। এখন বলতে হবে বীর বাঙালি ঐক্য গড়ো বাংলাদেশ রক্ষা করো।
তিনি বলেন, আপনার বিশ্বাস আপনার, আমরটা আমার। আপনি আপনারটা করবেন, আমি আমারটা করবো। সব ধর্মেই বলা আছে। আল্লাহ ও তাদের প্রেরিত নেক বান্দার পরেই মা বাবার স্থান। সেই প্রকৃত ভাল মানুষ যে তার মা বাবাকে সেবা করে। এটা আমি বিশ্বাস করি। আমি অনুরোধ করবো, মায়ের দোয়া কখনও বিফলে যায় না। তাই আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই।
সুন্দর বাংলাদেশের জন্য আগে নিজের পরিবারকে সুন্দর করুন। সত্য আঘাতপ্রাপ্ত হয় কিন্তু সত্যের জয় হবেই। আজ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। ত্রিশ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। এখনও এখানে ওই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
বাংলাদেশে দুটো দল। একটা আওয়ামী লীগ আরেকটা এন্টি আওয়ামী লীগ। আমরা শেখ হাসিনার কাছে চাইতেই আছি। আমরা কী দিয়েছি তাকে। তার বাবা বলেছেন আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, মানুষের অধিকার চাই। পাকিস্তানিরা তাকে মারতে সাহস পায়নি। তাকে মেরেছি আমরা। তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের জন্য এসেছিলাম। আজ যদি শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা বেঁচে না থাকতেন তাহলে কী হত।
আজ থেকে বাইশ বছর আগের ঘটনা। ২০০১ সালে আড়াইহাজারে একটা নির্বাচনী সভায় গিয়েছিলাম। প্রচন্ড গরম তখন। শেখ হাসিনা আসলেন বক্তব্য দিলেন। আমার সারা শরীর তখন ঘামে ভেজা। তখন তাকে গোপালগঞ্জে অলরেডি হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি কঠোর নিরাপত্তায় ছিলেন। তাকে বিদায় দিলাম।
কিছুক্ষণ পর এসএসএফ এসে বলল আপনাকে প্রধানমন্ত্রী ডাকছে। আমি গেলাম। তিনি বললেন, শামীম আমার সাথে যাবি, চান্দিনায় প্রোগ্রাম। আমি গেলাম তার সাথে। হেলিকপ্টারে গেলাম সেখানে গ্রামের মানুষ। হাত তুলে ডাকছে হাসিনা হাসিনা বলে। প্রধানমন্ত্রী ঘুরে তাদের দিকে যেতে লাগলেন। তাখন এসএসএফ তাকে বাধা দিল, তিনি বললেন এরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ। ওরা আমাকে মারবে না। তিনি গিয়ে তাদের বুকে জড়িয়ে ধরছেন। তিনি দেখলাম চোখ বন্ধ করে তাদের দোয়া নিলেন। হেলিকপ্টারে উঠে দেখলাম তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে কিন্তু তিনি হাসছেন। আমি বললাম আপা কী হয়েছে।
তিনি বললেন, ওরা যখন আমাকে জড়িয়ে ধরছিল আমার মনে হচ্ছিল আমার মা আমার বাবা আমার জন্য দোয়া করছে।সারা বিশ্ব আজ বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশ আর কারও পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে নেই। বাংলাদেশ আজ নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আগে ভুখা নাঙ্গা মানুষ রাস্তায় বসে থাকত। তাদের দেখিয়ে বিদেশ থেকে টাকা আনত আর হুইস্কি খেত। এখন সেই হাড্ডিসার মানুষ নেই। তাই তাদের ক্ষেভ। তারা দেশ বেঁচে খায়। তারা চেষ্টা করছে দেশকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে যেন পৃথিবীর সবচেয়ে অনুন্নত দেশ তৈরি হয়।
ভারতের সাথে আমাদের বিশাল বর্ডার। আমাদের ভৌগলিক সীমার কারনে আমরা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছি। সামনে অনেক কিছুই হবে। আমরা কী ভয় পাবো। আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমাদের পরিচয় আমরা বাঙালি।
নারায়ণগঞ্জে একটা দেবোত্তর সম্পত্তি আছে। আমি শুধু বলব আদালতে এরা বিচারাধীন। আদালত অবশ্যই ন্যায় বিচার করবে। আমার অনুরোধ নারায়ণগঞ্জ একটি ঐতিহ্যবাহী এলাকা।
তিনি আরো বলেন, আমি সিটি করপোরেশনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। সিটি করপোরেশনের মানুষ ট্যাক্স দেয়। ঢাকা সিটি করপোরেশন যদি ঈদ জামাতের ব্যবস্থা করতে পারে আপনারাও করবেন। ঈদ উল ফিতরে তো আমরাই করি।