১১’শ কেজির ‘রাজা বাবু’র দাম ১৭ লাখ টাকা

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৩, ১২:২০ | অনলাইন সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরে ১১’শ কেজির বিশাল দেহের অধিকারী ‘রাজা বাবু ওরফে কালা বাবু’র দাম উঠেছে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ১৭ লাখ টাকা। আরো বেশী দাম পাওয়ার আশায় আগামী রোববার গরুটিকে শহরতলীর ঐতিহ্যবাহী বাবুর হাট বাজারে উঠানো হবে। 

রাজা ওরফে কালা বাবু’র মালিক পারভিন জানান, রাজাকে গত মঙ্গলবার চাঁদপুরের একটি হাটে উঠানো হলে এর দাম উঠে ১৫ লাখ টাকা। তবু বিক্রি করা হয়নি। তবে এটিকে বাড়ি আনা হলে বাড়িতে বিভিন্ন স্থানের মানুষ এসে এর দাম উঠায় ১৭ লাখ টাকা। তবু রাজার মালিক বিক্রি করছেন না। 

গরুটির মালিক জানান, তারর ধারণা ছিল রাজা ওরফে কালা বাবু’কে বিক্রি করবেন ১০ লাখ থেকে ১২ লাখ টাকায়। কিন্তু এখন তিনি দেখেন এ রাজার দাম যেহেতু ১৭ লাখ উঠেছে, সেহেতু দেখা যাক আরো বেশী বিক্রি করা যায় কি না।

চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের গ্রিন বাংলা ডেইরি ফার্মে তিন বছর বয়সী ক্রস জাতের এ বিদেশী জাতের ষাঁড়ের ওজন এক হাজার ১০০ কেজি। বিদেশী জাতের বিশাল দেহীর এ ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘রাজা বাবু’ ওরফে ‘কালা বাবু’।

আসন্ন ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ষাঁড়টি। খামারের মালিক এটির দাম হাঁকছেন ১৮ লাখ টাকা।

শুক্রবার (২৩ জুন) বিকেলে খামারে গিয়ে দেখা যায়, ‘রাজা বাবু’ ওরফে কালা বাবু তার বসবাসকৃত গরুর ফার্মে শুয়ে আছে। খামারের মালিক পারভীন ইসলাম বাবুর কাছে গিয়ে বললেন, ‘রাজা বাবু’ দাঁড়াও। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ‘রাজা বাবু’ দাঁড়িয়ে গেল। তিনি যাই বলেন, ষাঁড়টি তার কথা মতো চলাচল করে।  

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভীন ইসলাম। তিনি চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে শখ করে নিজস্ব জায়গায় গড়ে তুলেছেন গ্রিন বাংলা ডেইরি ফার্ম। প্রথমে লালন পালন করেছেন ২০টি বিদেশি জাতের মুরগি। এরপর নিজেদের চাহিদা মেটানোর জন্য ২০০৭ সালে দুটি দুধেল গাভি লালন-পালন শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পশুর সংখ্যা। এখন তার খামারে দুধেল গাভি, ষাঁড়, ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ছোট ষাঁড় রয়েছে, যেগুলো কোরবানির জন্য বিক্রি করা হবে। ভেড়া বিক্রি করা শুরু হয়েছে, দাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দরে।

পারভীন ইসলাম বলেন, মূলত আমার খামারটি একটি আদর্শ খামার। আমি খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি। নিজস্ব জমিতে উৎপাদিত ঘাস আর খড়, খইল ও ভুসি খাওয়ানো হয় রাজা বাবুসহ অন্যান্য গবাদি পশুগুলোকে। বর্তমানে ৬৬টি গরু আছে এ খামারে। এগুলো লালন-পালন করার জন্য সাতজন শ্রমিক কাজ করে থাকে।

তিনি বলেন, ক্রস জাতের ফ্রিজিয়ান জাতের রাজা বাবুর জন্ম আমার খামারেই। এটির বয়স তিন বছরের কিছু বেশি হবে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের লোকজন এসে এটি মেপে আমাকে জানালেন ওজন এক হাজার ১০০ কেজি। গরুটির দাম চেয়েছি ১৮ লাখ টাকা। তবে কিছুটা কম বেশি হতে পারে।

ষাঁড়টির ওজন সম্পর্কে চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মুকবুল হোসেন জানান, আমাদের কার্যালয়ের লোকজন গত কয়েকদিন আগে এটি মেপেছেন। এটির ওজন হয়েছে, এক হাজার ১০০ কেজি, অর্থাৎ সাড়ে ২৭ মণ ওজন।

চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বখতিয়ার উদ্দিন জানান, পারভীন ইসলামের খামারটি একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। জেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক খামার গড়ে উঠেছে। এ বছর কোরবানির জন্য জেলায় চাহিদা রয়েছে ৭০ হাজার গবাদি পশুর। প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার গবাদি পশু। চাহিদার বাকিটা অন্য জেলা থেকে মিটবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।