৬ ঘন্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা মেয়র স্বপন মিয়াজীর
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৩, ২০:২০ | অনলাইন সংস্করণ
ফেনী প্রতিনিধি
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির বর্জ্য ৬ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী।
রবিবার (২৫ জুন) দুপুরে পৌর মিলনায়তনে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে ফেনী পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের জনসাধারণের মাঝে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ ব্যাগ বিতরণ অনুষ্ঠান তিনি এ ঘোষনা দেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, সেবার মান বাড়াতে মেয়র প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। জেলা পর্যায়ে ঈদ জামাত আয়োজনে ফেনী অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সেবার মান উন্নত করার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে সারা বাংলাদেশের মানুষ ফেনী পৌরসভাকে ঘুরে দেখতে চাইবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পৌরবাসীকে সহায়তা করতে অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, বর্জ্য অপসারণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পৌরসভা। কোরবানির বর্জ্য রাখার জন্য ব্যাগ দেয়া, ঈদগাহে মুসল্লিদের জন্য পানি, খেজুর বিতরণ করা। ধরনের ছোটখাট কাজের মাধ্যমে পৌরসভা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবে। এবং এই ধরনের কাজে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। মেয়রের প্রতিটি উদ্যোগ প্রশংসনীয় বলে জেলা প্রশাসক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী।
এসময় মেয়র বলেন, গতবছর কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করছি ৮ ঘণ্টার মধ্যে। এবার ঘোষণা দিচ্ছি পৌরবাসীর সহযোগীতায় ঈদের দিন ৬ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। দুপুর ১টা থেকে সেবকরা কাজ করবেন এবং সন্ধ্যা ৭টার মধ্যেই সকল বর্জ্য অপসারিত হবে। এবং কোরবানির বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পাশাপাশি মেয়র নিজেও মাঠে থাকবেন বলে জানান।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণের সঙ্গে জড়িত পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল ঘোষনা দিয়ে মেয়র বলেন, ১২টি টিমে ২শতাধিক সেবক কাজ করবে। যেই টিম যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে তাকে পুরষ্কৃত করার ঘোষনা দেন তিনি। শুধু শহরের প্রধান সড়ক নয়, অলিগলি থেকেও বর্জ্য অপসারণ করতে নির্দেশনা দেন। এছাড়া শহর দূর্গন্ধমুক্ত করতে বিভিন্ন সড়ক ও পাড়ায় পানি-ব্লিসিং পাউডার ছিটানো হবে।
মেয়র আরো বলেন, বর্জ্য অপসারণের কাজ করার কারণে সেবকরা ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন। এ জন্য ঈদের পরের দিন তাদের জন্য বিনোদন ও উন্নত মানের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, যারা কোরবানি করবেন সেসব পৌরবাসীর জন্য ২০ হাজার ব্যাগ (বস্তা) তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলদের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পৌরনাগরিকদের ধারে ধারে পৌছে দিবে। এই ব্যাগ (বস্তা) কোরবানির বর্জ্য রেখে দেবেন, সেগুলো আমরা অপসারণ করে নেব। তবে এসব বর্জ্য রাস্তা বা ড্রেনে না পেলার পরামর্শ্য দেন মেয়র।
৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাহার উদ্দিন বাহারের সঞ্চালায় সভায় প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, পৌর পরিষদের নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমে কর্মরত অর্ধশতাধিক সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
পৌরসভা সূত্র জানায়, শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে ১২টি টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টিমের জন্য একটি সুপারভাইজার ও একটি করে ট্রাক্টর দেওয়া হয়েছে। এসব টিমে ২শ জন সদস্য নিযুক্ত রয়েছে। এছাড়া একটি ভ্রাম্যমান টিম, একটি পানির গাড়ি ও একটি গাড়ি নিয়োজিত থাকবে। প্রতিটি টিমকে ১০০ করে ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। এসব টিমকে তদারকি করতে তিনজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ১নং থেকে ৬নং ওয়ার্ডে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর কৃষ্মময় বনিক, ৭নং থেকে ১২নং ওয়ার্ডে সাবেক (অবসর প্রাপ্ত) স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. শাহাজাহান, ১৩নং থেকে ১৮নং ওয়ার্ডে কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টর সরোয়ার আলম।
সূত্র আরো জানায়, পৌরসভার নির্ধারিত ৮১টি স্থানে পশু জবাই করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে মাইকিংও করা হয়েছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মাধ্যমে প্রতি ওয়ার্ডের জন্য ১ হাজার ব্যাগ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাগ বিতরণ শেষে মেয়র পৌরসভার ২ শতাধিক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে দিক নির্দেশনা মূলক পরামর্শ দেন। যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন করতে পারলে তাদের জন্য ঈদের পরে বেতন বৃদ্ধি ও পিকনিক করার ঘোষণা দেন। এবং পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত কর্মীদের শতভাগ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহবান জানান তিনি। গত বছরের ন্যায় এই বছর ঈদ উপলক্ষে তাদের জন্য দুটি গরু ও চারটি ছাগল জবাই করার নির্দেশ দেন।