টুঙ্গিপাড়ায় ক্যাশলেস স্মার্ট পশুরহাটে লবণ ফ্রি পাচ্ছেন ক্রেতারা

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৩, ১৪:২৪ | অনলাইন সংস্করণ

  গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ক্যাশলেস স্মার্ট পশুরহাটে গরু ছাগল কিনলেই ফ্রি লবণ উপহার পাচ্ছেন ক্রেতারা। আর এই লবণ দিয়েই সংরক্ষণ করা হবে কোরবানীর পশুর চামড়া। ক্রেতা ও বিক্রেতারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। আর এতেই ওই হাটে ক্রেতা সমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে। 

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী বাজারে ক্যাশলেস স্মার্ট পশুর হাটে এই ব্যবস্থা করেছেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।  ক্যাশলেস পশুর হাটের প্রথম গরু ক্রেতা মঈনুল ইসলাম অপুকে ১০ কেজি লবণ উপহার দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়।

বুধবার বিকেলে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী থেকে জেলার ৫ উপজেলায় প্রথম ৬ টি ক্যাশলেস পশুরহাট উদ্বোধন করেন। 

জেলায় স্থাপিত ‘স্মার্ট ক্যাশলেস’ পশুরহাটগুলো হচ্ছে- গোপালগঞ্জ পৌরসভায় মানিকদাহ হাউজিং প্রকল্প, সদর উপজেলার পাইককান্দি ইউনিয়নের তালা কেকানিয়া পশুর হাট, মুকসুদপুর উপজেলার টেংরাখোলা বাজার, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি পশুর হাট, কোটালীপাড়া উপজেলার মাঝবাড়ি পশুর হাট এবং কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া পশুর হাট।

সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, এবি ব্যাংক লিমিটেড ও ডাচবাংলা ব্যাংক লিমিটেড এ কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। এ পদ্ধতিতে নগদ টাকা লেনদেন হবে না। শুধুমাত্র কিউআর কোডের মাধ্যমে পশুর ক্রেতা-বিক্রেতা কেনা বেচার কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠনে জেলা প্রশাসক ক্যাশলেস পশুরহাট থেকে ক্রেতা একটা গরু কিনলে ১০ কেজি ও একটি ছাগল কিনলে ৫ কেজি লবণ বিনামূল্যে পাবেন বলে ঘোষণা দেন । 

ক্যাশলেস পশুর হাটে প্রথম গরু ক্রেতা মঈনুল ইসলাম অপু বলেন, ক্যাশলেস পশুর হাটে গরু কিনলে লবণ ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। এটা খুব সুন্দর উদ্যোগ। পশু জবাই করে এই লবণ দিয়েই চামড়া সংরক্ষণ করবো। এই ধরণের উদ্যোগের ফলে চামড়া সংরক্ষণ করে আমরা চামড়া ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারবো। এই কারণেই ক্যাশলেস পশুরহাট নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে বাড়তি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাশলেস পশুর হাটে নগদ টাকা লেনদেনে ঝামেলা নেই। এতে পশু কেনাকাটায় ব্যাপক সুবিধা হয়েছে। এই উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই।

ক্যাশলেস পশুরহাটের গরু বিক্রেতা অন্তর মন্ডল বলেন, প্রায়ই  গরুর হাটে টাকা ছিনতাই, জাল টাকাসহ বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। কিন্তু ক্যাশলেস পশুর হাটে এই বিড়ম্বনা বা হয়রাণী নেই। আর গরু বিক্রি করে টাকা জমা দেয়ার জন্য ব্যাংকেও যেতে হয় না। এখানে বসেই সব লেনদেন হয়। আর এই লেনদেনে কোন খরচ নেই। স্মার্ট বাংলাদেশের সুবিধা পশুরহাটেই পাওয়া যাচ্ছে। আমি প্রথম ক্যাশলেস হাটে গরু বিক্রি করেছি। এই পদ্ধতি আমার ভাল লেগেছে। এটি সবহাটে চালু করলে সবাই উপকৃত হবেন। জেলা প্রশাসক গরু ছাগল কিনলে লবণ ফ্রি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরণের উৎসাহ উদ্দীপনা শুরু হয়েছে। হাটে উৎসুক ক্রেতার আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করি এই উদ্যোগে পাটাগাতীর ক্যাশলেস পশুর হাট অন্যান্য বছরের তুলনায় আরো জমজমাট হয়ে উঠবে। বেচা-কেনা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি হবে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হিসেবে জেলায় এই প্রথম ক্যাশলেস পশুর হাট উদ্বোধন করা হয়েছে। ক্যাশলেস কেনাকাটায় টাকা বহনের কোন ঝামেলা নেই। এই পদ্ধতিতে জাল টাকা, চুরি, ছিনতাই ও টাকা হারানোর কোন ভয় নেই। আর এই সেবা গ্রহণে কোন পক্ষেরই টাকা খরচ হচ্ছে না। এই হাট জনপ্রিয় করতে লবণ ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। এই লবণ দিয়ে ক্রেতারা চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারবেন। এতে তারা চামড়ার ন্যয্যমূল্য পাবেন। ভাল মানের চামড়া পেয়ে দেশের চামড়া শিল্প উপকৃত হবে। 

এই বছর গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলার ৬ টি পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী বছর জেলার সব পশুর হাট ক্যাশলেস করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।