বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচনে ২ মেয়র সহ ৬৪ প্রার্থীর মাঝে প্রতিক বরাদ্দ
প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৩, ১৫:৪১ | অনলাইন সংস্করণ
বেনাপোল প্রতিনিধি
যশোরের বেনাপোল পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া দুই মেয়র ও ৬২ কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ১টা পযন্ত জেলা সিনিয়র নির্বাচন কার্যালয়ের মিলনায়তনে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আনিচুর রহমান প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের ঘোষণা দেন।
প্রতীক বরাদ্দের শুরুতে রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পর্কে অবহিত করেন। এ সময় মেয়র প্রার্থী এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা মিলনায়তনে উপস্থিত ছিলেন। প্রতীক ঘোষণা দেওয়ার পর মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে নির্বাচন এলাকায় মেয়র প্রার্থী এবং সমর্থকেরা প্রচারণা শুরু করেন। টানা ১৯ দিন প্রচার প্রচারণা শেষে ১৩ বছর পর আগামি ১৭ জুলাই বেনাপোল পৌরসভায় ৩০ হাজার ৩ শত ৮৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন নতুন জনপ্রতিনিধি।
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী ও বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নৌকা প্রতীক, বেনাপোল সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন মোবাইল ফোন প্রতীক পেয়েছেন। এছাড়া ৯টি ওয়ার্ডের সাধারণ ওয়ার্ডে ৪৭ জন প্রার্থী ও সংরক্ষিত আসনে ১৫জন প্রার্থীদের মাঝেও প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সংরক্ষিত ১ নাম্বার ওয়ার্ডে ৫জন। প্রার্থীরা হলেন-আসমা খাতুন অটোরিকসা, জবেদা খাতুন টেলিফোন, জুলেখা বেগম আনারস, জেসমিন আক্তার চশমা ও নাজমুন নাহার কাঞ্চন জবা ফুল। ২ নাম্বার ওয়ার্ডে ৭ জন। প্রার্থীরা হলেন-ফারহানা আনজুম বলপেন, কোহিনুর খাতুন আনারস, তাছলিমা খাতুন জবা ফুল,ফরিদা খাতুন দ্বিতল বাস, মরজিনা মিম চশমা, রোজিনা খাতুন অটোরিকা, সুমি খাতুন টেলিফোন। ৩ নাম্বার ওয়ার্ডে ৩ জন। প্রার্থীরা হলেন- কামরুনাহার আন্না চশমা, রিজিয়া খাতুন আনারস, সেলিম আক্তার জবা ফুল।
সাধারণ ওয়ার্ডে ১ নাম্বার ওয়ার্ডে তিন জন। প্রার্থীরা হলেন-আব্দুস সবুর টেবিল ল্যাম্প, আব্দুল মান্নান পাঞ্জাবি, সুলতান আহমেদ বাবু উট পাখি। ২ নাম্বার ওয়ার্ডে তিন জন। প্রার্থীরা হলেন- এনামুল হক ডালিম, জয়নাল আবেদীন উট পাখি, জাহিদুল ইসলাম টেবিল ল্যাম্প, শরীফুল ইসলাম পাঞ্জাবি, হাফিজুর রহমান পানির বোতল। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন।
প্রার্থীরা হলেন- ওহিদুল ইসলাম পাঞ্জাবি, জুলফিকার আলী ব্রীজ, মিজানুর রহমান উট পাখি, শাহরিয়ার নিয়াজ পানির বোতল, সুমন হোসাইন ব্লাক বোড। ৪ নম্বার ওয়ার্ডে ৫ জন। প্রার্থীরা হলেন- কাজী শাহীনুল ইসলাম ব্রীজ, জিল্লুর রহমান ডাবলু পানির বোতল, নাসির উদ্দিন বাবু ডালিম, হোসেন আলী পাঞ্জাবি,শাহ আলম উট পাখি। ৫ নাম্বার ওয়ার্ডে ৪ জন।
প্রার্থীরা হলেন- আজিম উদ্দীন গাজী পানির বোতল,আব্দুস সালাম উট পাখি, কামরুজ্জামান ঢেড়শ, রাশেদ আলী ডালিম। ৬ নাম্বার ওয়ার্ডে ৬ জন। প্রার্থীরা হলেন- মুসলিম আলী ব্রীজ,মোহাম্মদ আলী ব্লাক বোড, আইয়ুব আলী পানির বোতল, আসাদুজ্জামান উট পাখি, এনামুল হক ডালিম, মোস্তাফিজুর রহমান পাঞ্জাবি। ৭ নাম্বার ওয়ার্ডে ৬ জন। প্রার্থিরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম লাল পাঞ্জাবি, টুটুল হোসেন পানির বোতল, ফরহাদ হোসেন শাওন টেবিল ল্যাম্প, মজনুর রহমান ব্রীজ, মাসুদুর রহমান সুমন ডালিম, শেখ মফিজুর রহমান উট পাখি। ৮ নাম্বার ওয়ার্ডে ৮ জন।
প্রার্থীরা হলেন অব্দুল জলিল পানির বোতল, আমিন হোসেন, পাঞ্জাবি, কামাল হোসাইন টেবিল ল্যাম্প, জুযেল রানা গাজর, পারুল বেগম, উট পাখি, মেহের উল্লাহ ডালিম, হাবিবুর রহমান ব্লাক বোর্ড, হাসানুজ্জামান তাজিন ব্রীজ। ৯ নাম্বার ওয়ার্ডে ৫জন।
প্রার্থিরা হলেন কামাল হোসেন পাঞ্জাবি, জসীম উদ্দিন উট পাখি, বিপ্লব উদ্দিন পানির বোতল, মিজানুর রহমান ট্রাক ড্রাইভার, রিওন কবির ডালিম। এর আগে, ২৫ জুন ছিলো মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন।
এদিন মেয়র পদে বেনাপোল পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মিলন তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন এবং যাচাই বাছাইয়ে এই নির্বাচনের আরেক প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসনে উজ্জলের মনোনয়ন ঋণ খেলাপির দায়ে বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এছাড়া ঋণ খেলাপি, হলফনামাতে অমিল থাকা, হলফনামা যথাযথ না হওয়া এবং ফরম পূরণ পূনাঙ্গ না হওয়াতে সাধারণ ওয়ার্ডে ৮ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা আনিচুর রহমান বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন। ১৭ জুলাই সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে বেনাপোল ইউনিয়নের ১১টা গ্রামের অংশ নিয়ে বেনাপোল পৌরসভা গঠনের পর ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানে আর কোনো নির্বাচন হয়নি।
সেই নির্বাচনে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটন মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ওই পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও আর নির্বাচন হয়নি। প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভার নির্বাচন ঠেকাতে এলাকা নিয়ে মামলার কারণে নির্বাচন আটকে যায়। ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৪২ এর সংশোধনক্রমে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) আইন ২০২২ এর ধারা ৯ অনুযায়ী পৌর পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।