টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ডিশ লাইনের তার গলায় বেধে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে সজিব হোসেন নামে এক যুবক নিহত ও অপর তিন যাত্রী আহত হয়েছেন।
সোমবার (২৭ জুন) রাত ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা রেল লাইনের মির্জাপুর রেলস্টেশনের পূর্ব গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।আহতদের মধ্যে যাত্রী রিমন হোসেনকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার হাত ও পা ভেঙে গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
নিহত যাত্রী সজিব হোসেন (২০) নওগাঁ জেলার রাইজুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। আহত রিমন হোসেন (২৬) একই জেলার বদলগাছী উপজেলার এনামুল হকের ছেলে। আহত অপর দুই যাত্রীকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
মির্জাপুর রেল স্টেশনের পূর্ব গেটের গেটম্যান শান্ত ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাত ১২টা ৫ মিনিটে মির্জাপুর স্টেশন অতিক্রম করে। এর আধঘণ্টা পর আহত এক যুবক তার গেটের রুমে এসে জানান তিনি ওই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন। ছাদ থেকে পড়ে আহত হয়েছেন এবং আরেকজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেন। তারা এসে আহত ওই যুবককে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি আহত রিমন হোসেন জানান, তিনি গাজীপুর স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক কোম্পানিতে কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার জন্য রাত সাড়ে ১০টায় জয়দেব স্টেশন থেকে নওগাঁ যাওয়ার উদ্দেশে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে রওনা দেন। ট্রেনটি মির্জাপুর স্টেশনে পৌঁছলে তার পাশে বসা এক যাত্রীর গলায় ডিশ লাইনের তার আটকে যায়। এসময় তিনি ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার সময় বাঁচার জন্য তার পা ধরলে তিনিও পড়ে যান। ওই সময়ে আরও দুই যাত্রীর গলায় তার বেধে গেলে তারা আহত হলেও ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যাননি।
গেটম্যান শান্ত ইসলাম জানান, সোমবারও(২৬ জুন) তিনি ডিশ লাইন ব্যবসায়ীকে বলেছিলেন তারগুলো উঁচু করে টেনে দিতে। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেন নি। রাতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
টাঙ্গাইল রেল পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল আব্দুল মালেক জানান, খবর পেয়ে ভোর ৫টার দিকে মির্জাপুর গিয়ে নিহত এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রেললাইন সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ূব খান জানান, সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে গেটম্যান শান্ত ইসলাম তাকে জানালে তিনি এসে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সহায়তায় আহত যুবককে কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠান এবং পরে নিহত যুবকের মরদেহ রেললাইন থেকে খুঁজে বের করেন।মির্জাপুর
রেলস্টেশনের মাস্টার কামরুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রেল পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।রেল পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলী আকবর জানান, আহত ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।