কিশোরগঞ্জের প্রায় দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৬ তম ঈদুল আজহার জামাত। ঐতিহাসিক এ মাঠে আশেপাশের জেলা ছাড়াও দেশ-বিদেশ থেকে মুসুল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেন। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ঈদ জামাতকে ঘিরে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকালে সরেজমিনে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, চলছে ঈদুল আজহার নামাজের জন্য সবশেষ প্রস্তুতি। নামাজের সময় মুসুল্লিদের কাতার সোজা করার জন্য দাগ কাটাও শেষ পর্যায়ে। প্রতি বছর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাতের জন্য নেওয়া হয় ব্যপক প্রস্তুতি।
এবারও সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে স্থানীয় ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের কথা মাথায় রেখে। এ মাঠে ঈদের একটি মাত্র জামাত সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হবে। দেশ-বিদেশের প্রচুর মুসুল্লি শোলাকিয়া ঈদগাহে নামাজ পড়তে আসেন। বংশ পরম্পরায় এ মাঠে নামাজ পড়েন মুসুল্লিরা।
২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের নামাজ চলাকালীন শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে জঙ্গিদের অতর্কিত হামলায় দুই পুলিশ সদস্য সহ নিহত হয় চার জন। সেই থেকে ঈদের জামাতে বাড়তি নিরাপত্তার উপর জোর দেয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঈদগাহ পর্যবেক্ষণের জন্য তৈরি হয়েছে ৬ টি ওয়াচ টাওয়ার। পর্যবেক্ষণে থাকবে চারটি ড্রোন ক্যামেরা। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বেশ কয়েক স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে জেলা শহরসহ ঈদগাহ মাঠ। দূর-দূরান্তের মুসুল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানান, দূর-দূরান্ত থেকে ঈদগাঁ মাঠে আসা মুসুল্লিরা যাতে করে সুশৃঙ্খল ভাবে নামাজ আদায় করে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। সেজন্য জেলা প্রশাসন এবং পৌরসভার পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবারের ১৯৬ তম ঈদুল আজহার জামাত আদায় করে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন মুসুল্লিরা।
কথিত আছে, ১৮২৮ সালে প্রথম ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে এ মাঠে প্রথম সোয়ালাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় “সোয়ালাখিয়া”। যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত।