কোরবানির ঈদের পর দিন থেকে প্রাণ ফিরেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত কক্সবাজারে। এখানকার হোটেল-মোটেল, গেস্ট ও রেস্টহাউসগুলোর শতকরা ৬০ ভাগ রুমের বুকিং হয়েছে। তবে এবার ঈদে সরকারি ছুটি এবং সাপ্তাহিক ছুটির একই দিন হওয়ায় ব্যবসার সময়ও বেশি হচ্ছেনা বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। সৈকত ছাড়াও জেলার পর্যটন স্পট ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও রামুর বৌদ্ধপল্লীতেও ভ্রমন পিপাসুদের ভিড় জমছে। তবে পর্যটকদের চেয়ে স্থানীয় দর্শণার্থীদের সংখ্যাই বেশি। যাদের মাঝে চট্টগ্রাম ও আশপাশের পর্যটকও রয়েছে। তবে চালু হয়নি দেশের প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন নৌ-রুটের জাহাজ চলাচল।
এদিকে, পর্যটকদের নিরাপদে ভ্রমণ নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন, লাইফ গার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশ। এ ক্ষেত্রে নিয়ম-কানুন মানতে পর্যটকদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে শনিবার দুপুরে গোসল করতে নেমে সাআদ নামে এক পর্যটকের করুন মৃত্যু হয়েছে।
সূত্রমতে, ঈদের ছুটিতে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে কক্সবাজারে। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ঈদের আগে থেকেই কক্সবাজারের চার শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট ও রেস্টহাউসের অধিকাংশ রুম বুকিং হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটকরা কক্সবাজার এলে কেবল শহরের সমুদ্রসৈকতেই ঘুরে বেড়ান না, পাশাপাশি ইনানীর পাথুরে সৈকত, হিমছড়ির পাহাড়ি ঝরনা ও দরিয়ানগর পর্যটনপল্লী, টেকনাফের মাথিনকূপ, কুদুমগুহা, নেচার পার্ক, নাফ নদীর জালিয়াদ্বীপ, মিয়ানমার সীমান্ত, প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, রামুর বৌদ্ধপলিসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে যান।
হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বীচ হলিডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফিজুর রহমান লাভলু বলেন, ঈদের আগেই বেশিরভাগ হোটেলের ৬০ ভাগ রুমেই বুকিং হয়েছে। তবে এবারে ঈদে সরকারি ছুটি এবং সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ও শনিবার হওয়ায় পর্যটকরা দীর্ঘ সময় কক্সবাজারে অবস্থান করবেন না। তাই এবারে ব্যবসাটাও কম হবে। আবার অনেক পর্যটক সকালে এসে রাতে ফিরে যাচ্ছেন। শনিবার বিকেলে সমুদ্র সৈকতের গিয়ে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পর্যন্ত পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ করছেন গোসল, কেউ গান গাইছেন, আবার কেউ প্রিয়জনকে সাথে খালি পায়ে সাগরের নোনা জলের ছোঁয়া নিচ্ছেন। কেউ জেট স্কি আবার কেউ চালাচ্ছেন বিচ বাইক চালিয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন। ঘোড়ার পিঠে সাওয়ারী হয়েছেন কেউ কেউ।
ঈদের ছুটিতে ভিড়ের মাঝে পর্যটকরা যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন সে লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশও বেশ সক্রিয় রয়েছে বলে জানান কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শেহরিন আলম।
তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকের আগমন একটু বেশি হয়। এটি মাথায় রেখে নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। বাড়ানো হয়েছে লোকবল। পর্যটক নির্বিঘ্নে কক্সবাজার শহরের কলাতলী, সি-ইন ও লাবণী পয়েন্ট ঘুরতে পারে সেজন্য সৈকতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ পাহারা থাকছে। শুধু তাই নয়, সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ।
ট্যুুরিস্ট পুুলিশের এএসপি আরও বলেন, গোসলে নামার আগে পর্যটকদের জোয়ার-ভাটার সময় দেখে নেয়ার পরামর্শ সম্বলিত নির্দেশনা রয়েছে সৈকতের বিভিন্ন স্পটে। তারপরও অনেক পর্যটক অসাবধনতা বসত সাগরে নেমে পড়েন। ফলে অনেক সময় দূর্ঘটনা মোকাবেলা করতে হচ্ছে আমাদের।