ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ‘এমভি সাগর নন্দিনী-২’ নামে তেলবাহী জাহাজ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চাঁদপুরের মাসুদুর রহমান বেলালের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মাসুদুর রহমান ওই জাহাজের মাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঘটনার পর থেকে জাহাজের ৪ জনের সাথে তিনিও নিখোঁজ রয়েছেন।
মাসুদ বেঁচে আছেন কি না সেটিও তার পরিবার জানতে পারছে না। তাকে জীবীত অবস্থায় দ্রুত উদ্ধারে শোকাহত পরিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন।
নিখোঁজ মাসুদ চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের বাগড়া বাজার সোবানপুর গ্রামের সাদিকুর রহমানের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে চাঁদপুর শহরের ছৈয়াল বাড়ি রোডে থাকতেন। মাসুদুর রহমান বেলাল দুই কন্যা সন্তানের জনক।
মাসুদুর রহমান বেলালের বোন লতা জানান, আমার ভাই শনিবার (১ জুলাই) সকাল ৮টায় বাসা থেকে বের হয়ে ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। দুপুর ১টা ৩৩ মিনিটে সময় বাড়িতে ফোন করে জানান তিনি জাহাজে পৌঁছেছেন এবং নামাজ পড়ে দুপুরের খাবার খাবেন। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে অবস্থান করা একজনের কাছ থেকে আমরা জাহাজটিতে বিস্ফোরণের খবর পাই। তারপর থেকে আমার ভাইয়ের কোন খোঁজ খবর পাচ্ছি না।
লতা আরো জানান, এই খবর শোনার পর থেকে আমাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের সদস্যদের কান্না কিছুতেই থামছে না। আমরা সরকার এবং প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি, উদ্ধারকাজ যেন দ্রুতভাবে সম্পন্ন করে এবং আমাদের ভাইকে আমরা জীবিত অবস্থায় ফিরে পেতে পারি।
জানা গেছে, গত ১ জুলাই শনিবার দুপুর ২টার দিকে সুগন্ধা নদীতে ঝালকাঠি পৌর খেয়াঘাটের বিপরীত পাশে নোঙর করা অবস্থায় পদ্মা অয়েল কোম্পানির তেল বোঝাই ‘এমভি সাগর নন্দিনী-২’ জাহাজে এই বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ওই জাহাজের ইঞ্জিনকক্ষের ওপরে থাকা মাস্টার ব্রিজটি পুরোপুরি ছিটকে নদীতে পড়ে যায়। তবে যে অংশে তেল রয়েছে, সেই অংশটি অক্ষত থাকায় নদীতে তেল ছড়িয়ে পরেনি। বিস্ফোরণের পর ওই জাহাজের ৯ জন কর্মীর মধ্যে ৪ জন নিখোঁজ ছিলেন। বাকি ৫ শ্রমিককে দগ্ধ অবস্থায় আহত হন। আজ রোববার (২ জুলাই) নিখোঁজদের মধ্যে আব্দুস সালাম হৃদয় নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে জাহাজের ইঞ্জিনরুম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত হৃদয় জাহাজের গ্রিজারম্যান ছিলেন।