কমল নগরে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৩, ২৩:২৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আলমগীর হোসেন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

ভিজিএফ চালের ভুয়া টোকেন বানিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মো. সিরাজুল ইসলাম নামের এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

কমলনগর আমলী অঞ্চলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. তারেক আজিজ স্ব-প্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সকালে আদালতের নাজির মো. ইয়াসিন আরাফাত আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার (৫ জুলাই) আদালত এ সংক্রান্ত আদেশ প্রদান করে বলে জানান তিনি।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে ভুয়া টোকেন বিতরন বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদের সূত্র ধরে আদালতের বিচারক সেটি পর্যালোচনা করে এ আদেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি আদালতের দৃষ্টিগোচর হলে আদালতের বিচারক স্ব-প্রণোদিত হয়ে ক্রিমিলান প্রসিডিউর কোড-১৮৯৫ এর ১৯০ (১১)(সি) ধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মেম্বার সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে পেনালকোড ৪০৬, ৪১৭ ও ৪২০ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করার আদেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ১৫ জুন লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় গণমাধ্যমে 'কমলনগরে নকল টোকেনে চাল নিতে এসে প্রতারিত অর্ধশতাধিক দরিদ্র মানুষ' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

একই বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ঈদ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভিজিডি চাল চার হাজার ৬৫০ জন লোকের মাঝে ১০ কেজি করে বিতরণের জন্য লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ ইউনিয়ন পরিষদের অনূকূলে ৪৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

চাল বিতরণ সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করার জন্য পরিষদের সকল সদস্যদের সাথে আলোচনা করে প্রত্যেক নামের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সিল সম্বলিত টোকেন সিস্টেমের সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ হাজার ৬ শত ৫০ নামের জন্য ৪ হাজার ৬ শত ৫০ টি টোকেন পরিষদের সকল সদস্যদের দিয়ে বিতরণ করা হয়। টোকেন দেখে চাল বিতরণ শুরু করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার, চেয়ারম্যান ও পরিষদের সদস্যরা।

চাল বিতরণ সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করার জন্য পরিষদের সকল সদস্যদের সাথে আলোচনা করে প্রত্যেক নামের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সিল সম্বলিত টোকেন সিস্টেমের সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ হাজার ৬ শত ৫০ নামের জন্য ৪ হাজার ৬ শত ৫০ টি টোকেন পরিষদের সকল সদস্যদের দিয়ে বিতরণ করা হয়। টোকেন দেখে চাল বিতরণ শুরু করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার, চেয়ারম্যান ও পরিষদের সদস্যরা।

চাল বিতরণের এক পর্যায়ে কয়েকজন একাধিক নকল টোকেন সহ ধরা পড়ে চাল বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক লোক শতাধিক টোকেনসহ ধরা পড়ে। এরা সকলে ওই ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার বলে জানায়।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ভিজিএফ’র ১০ কেজি চাল পেতে তাদেরকে টোকেন দিয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন। তব টোকেনগুলা নকল তা তারা জানতেন না।

ঘটনার পর চর লরেঞ্চ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল আমিন টোকেনগুলো জব্দ করেন এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান।

চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, সিরাজ মেম্বারকে ১৯০টি টোকেন দেওয়া হয়েছে। সে চালের সংকট করে আমাকে বিপদে ফেলানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে অতিরিক্ত টোকেন ছাপিয়ে তার ওয়ার্ডে বিলি করে।

এর আগেও সে এমন কাজ করেছে। এ ব্যাপারে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।