রংপুরে রায় ঘোষণার পরেই উধাও নারী আসামী

প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৩, ২১:২৯ | অনলাইন সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

রংপুরে ফেনসিডিডিল ও ইয়াবা রাখার দায়ে দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় নারী মাদক কারবারীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অপর এক আসামীকে ১০ বছর কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবারু দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২ এর বিচারক কৃষ্ণকান্ত রায় এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষনার আগেই নারী আসামী আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে গেছে। পুরো বিষয়টি নিশ্চিত করেন সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পিপি নয়নুর রহমান টফি এ্যাডভোকেট। এদিকে রায় ঘোষনার আগে দন্ডপ্রাপ্ত এক নারী আসামী আদালতে হাজিরা দিয়ে উপস্থিত থাকলেও রায় ঘোষনার সময় আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যায়।

আদালত ও মামলার অভিযোগে জানা গেছে ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল তারিখে পঞ্চগড় থেকে নাবিল পরিবহন নামে একটি নাইট কোচ ঢাকায় যাবার পথে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ওই নাইট কোচটি থামিয়ে মালামাল রাখার স্থানে তল্লাশী চালিয়ে ৫০টি ফেনসিডিল সহ একটি ব্যাগ উদ্ধার করে। মালামাল রাখা যাত্রীদের ট্যাগ দেখে মাদক কারবারী মাহমুদা আখতারকে আটক করে পুলিশ। তার স্বামীর নাম আফজাল হোসেন বাড়ি দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার সাজনপুকুর বান্দিপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানার এস আই শাহাদত হোসেন বাদী হয়ে মাদক নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করে।

পরবর্তীকালে তদন্ত শেষে আসামী মাহমুদা আখতারের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসীট দাখিল করে। মামলায় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামীকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবান সশ্রম কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেয় আদালত। রায় ঘোষনার আগে আসামী আদালতে হাজিরা দিয়ে উপস্থিত থাকলেও রায় ঘোষনার সময় আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যায়।

সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি নয়নুর রহমান টফি এ্যাডভোকেট জানান, আসামী আদালতে হাজিরা দিয়েছিলো। কিন্তু রায় ঘোষনার সময় তাকে ডাকাডাকি করেও আর পাওয়া যায়নি। সে আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আদালত আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির আদেশ দেন সেই সাথে গ্রেফতারের দিন থেকে রায় কার্যকর করে হবে বলে বিচারক আদেশ নামায় উল্লেখ করেছেন।

এদিকে অপর এক মাদক মামলায় ২শ ৯৩পিস ইয়াবা রাখার দায়ে আসামী আজিনুল আলম ভুট্টুকে দোষি সাব্যস্ত করে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহসপতিবার দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২ এর বিচারক কৃষ্ণকান্ত রায় এ রায় প্রদান করেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে,  ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল তারিখে রংপুর নগরীর ডাঙ্গির পাড় আহলে সুন্নাত ফোরকানিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কাঁচা রাস্তা থেকে ২৯৩ পিস ইয়াবা সহ আসামী ভুট্টুকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে র‌্যাব আসামী ভুট্টুর প্যান্টের ডান পকেটে বিশেষ কায়দায় রাখা ২৯৩ পিস ইয়াবা সহ আসামী ভুট্টুকে গ্রেফতার করে। তার বাবার নাম আব্দুল হক বাড়ি নগরীর দেওদোডা ডাঙ্গিরপাড় এলাকায়। এ ঘটনায় র‌্যাব ১৩ এর পরিদর্শক এস এম সোবহান বাদী হয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসীট দাখিল করা হয়। মামলায় ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামী ভুট্টুকে দোষি সাব্যস্ত করে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত। রায় ঘোষনার সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলো। পরে পুলিশী পাহারায় তাকে আদালতের হাজতখানায় নেয়া হয়।

সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী নয়নুর রহমান টফি এ্যাডভোকেট জানান, মাদক মামলায় আসামীর সাজা দেবার মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়েছে। আসামী পক্ষের কোন আইনজিবী উপস্থিত না থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।