ঈশ্বরগঞ্জে বড় ভাইয়ের দায়ের কোপে বিচ্ছিন্ন ছোট ভাইয়ের হাত
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৩, ১৩:৪০ | অনলাইন সংস্করণ
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আপন দুই ভাইয়ের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বড় ভাই মকবুল হোসেনের দা'য়ের কোপে ছোট ভাই মো. বিল্লাল হোসেনের ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সেই সাথে পেটে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করার ফলে পেট কেটে ভুঁড়ি বের হয়ে যায়। এ ঘটনায় আহত ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকেও দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। খবর পেয়ে বড় ভাই মো. মকবুল হোসেন (৫০) কে আটক করেছে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ।
আহতরা হলেন- উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচর গ্রামের টান মলামারি এলাকার মৃত শাহেদ আলীর ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন (৪৫) ও তার স্ত্রী বিলকিস বেগম (৪০)।
এ ঘটনায় বিল্লালের ছেলে সুজন মিয়া (২১) বাদী হয়ে মো. মকবুল হোসেনকে প্রধান আসামী করে চাচি মোছা. সালমা খাতুন (৪৫) সহ তিনজনকে আসামি করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আহত বিল্লাল হোসেনের মেয়ে তামান্না বলেন, বাড়ির আঙ্গিনায় বেগুন গাছের চারা রোপণকে কেন্দ্র করে রোববার সকাল থেকেই আমার চাচা মকবুল হোসেন আব্বার সাথে ঝগড়া করে আসছিলেন। দুপুরে চাচা ধারালো দা নিয়ে আমাদের ঘরে প্রবেশ করে আব্বার মাথা বরাবর কোপ দিতে চাইলে আব্বা ডান হাত দিয়ে ফেরাতে গেলে হাতের তিনটি আঙ্গুলসহ হাতের অর্ধেক কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায় ও পেটে এলোপাতাড়ি কোপানোর ফলে পেটের ভুঁড়ি বের হয়ে যায়। এসময় আব্বাকে বাঁচাতে আম্মা এগিয়ে গেলে আম্মাকেও পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে।
মারামারির ঘটনায় ছোট ভাই ও তার স্ত্রী আহত হয়েছেন। তবে ধারালো দায়ের কোপে ছোট ভাই বিল্লালের ডান হাতের কবজি পর্যন্ত প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহত বিল্লাল ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে বিল্লালের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। অপরদিকে, তার স্ত্রী বিলকিস বেগম ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিল্লালের ভাতিজা সুমন মিয়া (২৫) বলেন, মকবুল চাচা আমার বাবাকেও খুন করেছিলেন। এখন আমার ছোট চাচাকেও মারার জন্য কুপিয়ে আহত করেছেন। তিনি দাঙ্গাবাজ ও সন্ত্রাস প্রকৃতির লোক। তার অত্যাচারে কেউ বাড়িতে থাকতে পারে না। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
বিল্লালের বড় ভাই গিয়াসউদ্দিন (৭০) কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, মকবুলের অত্যাচারে আমরা কেউ বাড়িতে থাকতে পারিনা। আমার ছোট ভাইটারে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে মকবুলকে আটক করা হয়। ঘটনার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় একটি মামলা হয়েছে। সোমবার (১০ জুলাই) আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।