সীতাকুণ্ডে বাস থেকে দেড় কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৩, ১৬:৪০ | অনলাইন সংস্করণ
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সীতাকুণ্ডে যাত্রীবাহী বাস থেকে দেড় কোটি টাকা মূল্যের হেরোইন উদ্ধার। মাদক কারবারিরা হেরোইন পাচারের জন্য নিরাপদ সড়ক হিসেবে ব্যবহার করছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশ থেকে গত দুই মাসে ছয় কোটি টাকা মূল্যের হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
সর্বশেষ গত রোববার (৯ জুলাই) বিকেল ২টার সময় উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মিক্কো পেট্টোলপাম্প সংলগ্ন এলাকায় প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে ‘হানিফ পরিবহন’ নামের একটি বাসে তল্লাসী চালিয়ে উদ্ধার করা হয় এক কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইন। উদ্ধারকৃত হেরোইনের দাম আনুমানিক দেড় কোটি টাকা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন ও সীতাকুণ্ড মডেল থানা পুলিশসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
অভিযান সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে ঢাকা থেকে হানিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে করে হেরোইনের বড় একটি চালান চট্টগ্রামের দিকে আসছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়।
দুপুর দুইটার দিকে তথ্য অনুযায়ী যাত্রীবাহী বাসকে সংকেত দিলে সেটি দাঁড়ায়। পরে বিজিবির দুটি প্রশিক্ষত কুকুর দ্বারা উক্ত বাসকে তল্লাশি করলে একটি কালো ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ব্যাগটি খুললে ভেতর থেকে ০৯টি বায়ুনিরোধক পলিথিনে মোড়ানো হেরোইন পেকেট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হেরোইনের ওজন এক কেজি ৪০০গ্রাম। কিন্তু কে বা কারা এই হিরোইন বহন করতেছে তা সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে ৬ জনকে আটক করা হয়।
পরিবহনের চালক আবুল কাসেম বলেন, রোববার সকাল সাতটার সময় ঢাকা থেকে গাড়িটি ছেড়ে আসে। সহকারী ও সুপারভাইজার দায়িত্ব পালন করে। বিভিন্ন স্থানে যাত্রী নামিয়ে আসছেন বলে জানান তিনি। গাড়ির ডেকে থাকা মালামালের কাগজ বুঝে নেন তিনি। রোববার বেলা ২টার দিকে বিজিবি সদস্যরা সংকেত দিলে তিনি গাড়িটি থামান। এরপর যাত্রীদের বিভিন্ন মালামাল তল্লাশি করে একটি কালো কাপড়ের ব্যাগের ভেতর থেকে হেরোইন উদ্ধার করে বিজিবি, কিন্তু সেটা কোন্ যাত্রীর ব্যাগ, তা বের করা যায়নি।
বিজিবি ৮-এর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী জানান, ঢাকা থেকে বাসটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছাড়ার সময় তাঁরা হেরোইনের চালানের খবর পান। তাঁদের বিশেষ প্রশিক্ষিত কুকুরের মাধ্যমে যাত্রীর কালো কাপড়ের ব্যাগ থেকে হেরোইনগুলো উদ্ধার করেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পরও গাড়িতে থাকা যাত্রীদের কেউ হেরোইনের বিষয়ে স্বীকার করেননি। পূর্বে উদ্ধার হওয়া হেরোইনের সঙ্গে গত রোববার হেরোইন পাচারের যোগসূত্র রয়েছে বলে তাঁদের ধারণা।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হেরোইন পাচারের খবর পেয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী এলাকায় অবস্থান নেওয়া হয়।
এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমূখী হানিফ পরিবহন থামিয়ে ভেতরে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় গাড়িতে মালপত্র রাখার জায়গায় একটি কালো কাপড়ের ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ব্যাগটি খুললে ভেতর থেকে ০৯টি বায়ুনিরোধক পলিথিনে মোড়ানো হেরোইন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হেরোইনের ওজন এক কেজি ৪০০গ্রাম। বাসের ভেতরে থাকা ৪০ জন যাত্রীর মধ্যে উদ্ধার করা ব্যাগটি কার তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যাত্রীরা কেউ ব্যাগটির দায়িত্ব নেয়নি।
এর পূর্বে গত ৯জুন উপজেলার তেতুলতলা এলাকায় ‘সুপার সনি’ নামক একটি যাত্রীবাহী বাসে প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে তল্লাসী চালিয়ে দুই কোটি টাকা মূল্যের হেরোইন উদ্ধার করা হয়। একই সপ্তাহে উপজেলার ভাটিয়ারি দক্ষিণ বাজার এলাকা থেকে এক কোটি টাকা মূল্যের হেরোইন উদ্ধার করেছিল বিজিবির এই দল। এক মাসের ব্যবধানে হেরোইনের আরও একটি চালান ধরা পড়ল ।