ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাভারে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশের তল্লাশি

সাভারে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশের তল্লাশি

রাজধানীতে ঢাকায় একইদিনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সাভার হয়ে ঢাকায় প্রবেশের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে পুলিশ।

বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর প্রবেশের পথগুলোতে ছিল পুলিশের বাড়তি উপস্থিতি। আমিনবাজার ব্রিজে ঢাকামুখী প্রতিটি গাড়িতে তল্লাশী করছে পুলিশ।

এতে যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোতে পুলিশের তল্লাশীর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। তবে পুলিশ বলছে, নিরাপত্তাজনিত কারণেই ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে পুলিশি কার্যক্রম চলছে।

সাভারের বলিয়ারপুর থেকে আমিনবাজার ব্যাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ঢাকাগামী লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। ১০-১৫ মিনিট পরপর ৬-৭টি করে যানবাহন ছাড়ছে পুলিশ। অনেকে বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও অবশেষে হেঁটেই রওনা হয়েছেন।

শুধু আমিনবাজারেই নয় এই পথে আসতে সাভারের বিরুলিয়া ব্রীজ, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ শাখা সড়কগুলোসহ আশুলিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে পথে পথে চলছে পুলিশের তল্লাশী।

পথচারী ও পরিবহণের যাত্রীরা জানান, আমিনবাজারে পুলিশ বাসগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছে। তাদের কাগজপত্র চেক করছে। মূলত সেখান থেকে বাসগুলোকে ঢাকার ঢুকতে না দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। একারণে আমিনবাজার থেকে হেমায়েতপুর পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের দেখা দিয়েছে। অসংখ্য যাত্রী হেমায়েতপুর থেকে হেঁটেই আমিনবাজার আসছেন। পুলিশ তল্লাশির নামে বাসগুলোকে ঢাকায় ঢুকতে না দেয়ায় হয়রানী হচ্ছেন বলেও অভিযোগ তাদের।

চাকুরিজীবী মিজানুর রহমান জানান, সকালে অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর সাভার থেকে বাসে উঠি। যদিও যানজটের কারণে আমিনবাজারের আগেই বাস থেকে নেমে হেঁটে গিয়েছি। পরে আমিনবাজার পুলিশ চেকপোস্ট পার হয়ে আবার ঢাকার ভিতরের লোকাল বাসে উঠে ঢাকায় এসেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাস মালিক জানান, সকালে আমিনবাজারে পুলিশ চেকপোস্টে আমাদের কোন বাস ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই আমিনবাজার থেকেই আবার সাভারে ফেরত আসতে হচ্ছে।

এসব তল্লাশীতে সাভার থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা চেয়ারম্যানসহ ৮ নেতা কর্মী আটক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে সাভার থানা বিএনপি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম জানান, ঢাকায় সমাবেশে আসার পথে তাদের বাস আটকে দেয়া হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার পর্যন্ত তারা সাভারের বলিয়ারপুরে আটকা পড়ে ছিলেন।

এদিকে সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার সময় সাভারে বিএনপি নেতাকর্মীদের ৪০টি হায়েচ গাড়ি আটকে দেয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকায় সমাবেশে যোগদেয়ার জন্য ৭০ টি হাইয়েচ গাড়ি ভাড়া করা হয়। সকাল থেকে জাহাঙ্গীরনগর সোসাইটি গেইটে নেতাকর্মী ও গাড়িগুলো আসে। বেলা ১০ টার দিকে ৩টি গাড়িতে সাভার মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রাশিদের নেতৃত্বে তাদের ৪০টি গাড়ি আটকে দেয়। ১৪ টি গাড়ির চাবি নিয়ে গেছে। তাদের সমাবেশে নো যেতে দিতেই সাভার থেকে আমিন বাজার পর্যন্ত অন্তত চার যায়গায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ তার।

জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাশিদ মুঠোফোনে বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে কারও গাড়ি আটকানো হয়নি। এই প্রতিবেদককে ঘটনাস্থলেেএসে কথা বলতে বলেন তিনি।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ট্রাফিক সপ্তাহ চলতেছে এজন্য আমরা আমিনবাজারে রয়েছি। বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে আমরা কাউকে আটক করিনি ও কারো গাড়ি আটকানো হচ্ছেনা।

ঢাকার প্রবেশমুখ আমিনবাজার, বিরুলিয়া ও আশুলিয়ায় চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে ভোর থেকেই। এছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীদের ৪০টি গাড়ী আটকে রাখার বিষয়টি তিনি জানেননা- যোগ করলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিএনপিসহ ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোট। অন্যদিকে বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধ একই সময়ে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। দুই দলকেই ২৩টি শর্তে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।

চেকপোস্ট,পয়েন্ট,তল্লাশি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত