মানিকগঞ্জে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩, ১৮:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ

  দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জেলা শহরে একাধিক স্থানে মিলেছে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার উপস্থিতি। এ অবস্থায় জেলা জুড়ে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ছোটবড় সব বয়সী মানুষই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন।

বুধবার ( ১২ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে ১৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করছেন। তারা বলেন হাসপাতালের ফ্যান নষ্ট, হাসপাতালের সিবিসি মেশিন অকেজো থাকায় দ্বিগুন টাকা খরচ করে বাহির থেকে রিপোর্ট করাতে হচ্ছে, মশাড়ি ছেড়া সেইসাথে টাঙ্গানোর ব্যবস্থাও নেই।

চিকিৎসাধীন মলি আক্তার জানান আমি বাড়ি থেকে আক্রান্ত হয়েছি। তিনদিন ধরে হাসপাতালে আছি কিন্তু মশারি টাঙ্গাতে পারছিনা।

শিবালয় থেকে আসা ডেঙ্গু রোগী রাসেলের স্বজন অভিযোগ করে বলেন হাসপাতালের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন, ফ্যান নষ্ট। হাসপাতালের মেশিন নষ্ট থাকায় দ্বিগুন টাকা খরচ করে বাহির থেকে পরিক্ষা করাতে হচ্ছে। যা আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পরছে।

হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. সাকিনা আনোয়ার বলেন, আমাদের এখানে রোগীদের স্যালাইনসহ সব ধরনের ওষুধপত্র আমরা দিয়ে থাকি।

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন বলেন, জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত এখানে ১১৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে জেলার বিভিন্ন এলাকাতেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু রোগীদেরকে বিশেষায়িত কক্ষে মশারির নিচে রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও নার্সের তত্ত্বাবধানে তারা সেবা পাচ্ছেন। পুরুষ রোগীদের জন্য ১৮এবং নারী রোগীদের জন্য ১৮ শয্যার ডেঙ্গু ওয়ার্ড প্রস্তুত রয়েছে।

মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গুর লক্ষণে এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। তাই সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আগে সবাই বলতো এডিস মশা দিনে দংশন করে। এটা ঠিক নয়। এই মশা এখন দিন-রাতে সব সময়ই দংশন করে। তাই বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি মশা যেন কামড়াতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বাসার বারান্দায় রাখা গাছের টব, প্লাস্টিকের ব্যাগ, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, প্লাস্টিকের বোতল, গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ারে পানি জমে থাকতে দেয়া যাবে না। জেলায় আশঙ্কাজনকহারে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অন্তত সামনের দুইমাস সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।