গোপালগঞ্জে কৃষি জমিতে ফেলা হচ্ছে হোটেল বর্জ্য
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৩, ১৫:২৭ | অনলাইন সংস্করণ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জে হোটেল-রেস্তোরাঁর বর্জ্য ফসলি জমিতে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে জমির উর্বরতা নষ্টের আশংকা করছেন কৃষক। আর বর্জ্যরে পঁচা গন্ধে নাক চেপে পথচারীরা চলাচল করছেন।
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার হিরোণ্যকান্দি গ্রামের ‘সাম্পান হাইওয়ে ইন রেস্টুরেন্টের’ বর্জ্য ফেলা হচ্ছে পাশ্ববর্তী পিংগলিয়া গ্রামের কৃষি জমিতে। এই বর্জ্য থেকেই পরিবেশে দূষন ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয় প্রতিকার চেয়ে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন পিংগলিয়া ভূক্তভোগী কৃষকরা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে , ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার হিরোণ্যকান্দি গ্রামে অবস্থিত ‘সাম্পান হাইওয়ে ইন রেস্টুরেন্ট’।
ঢাকা-খুলনা, যশোর-বোনাপোল চলাচলাকারী শত শত যারবাহন এখানে যাত্রা বিরতি করে। অভিজাত এই রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ দিন-রাত সমানে খাবার গ্রহন করেন। এখানে প্রতিদিন টনকে টন বর্জ্য সৃষ্টি হয়।
এই বর্জ্য ট্রাকে করে ১০ কিলোমিটার দূরে কাশিয়ানী উপজেলার পিংগলিয়া গ্রামের ফসলি জমির পাশে ফেলা হচ্ছে। বৃষ্টিতে ক্ষতিকর বর্জ্য কৃষকদের জমিতে গিয়ে পড়ছে। এতে জমির ফসলের ক্ষতির আশংকা করছেন শতাধিক কৃষক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পিংগলিয়া ওড়ালসেতুর নিচে সাম্পান হাইওয়ে ইন রেস্টুরেন্টের চানাচুর, চিপস ও বিস্কুটের মোড়ক, পলিথিন, প্লাষ্টিকের বোতল, অপচনশীল জাতীয় দ্রব্য ও বর্জ্য ফেলা ফেলা হচ্ছে। বৃষ্টিতে রাস্তার পাশে ফেলা বর্জ্য আশপাশের জমিতে গিয়ে পড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে খাবারের অবশিষ্টাংশ পঁচে গন্ধ ছড়াচ্ছে। বর্জ্যরে দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে পথচারীদের নাক চেপে চলাচল করতে হচ্ছে।
কাশিয়ানী উপজেলার পিংগলিয়া গ্রামের কৃষক ফিরোজ মোল্যা, বাচ্চু মোল্যা, মোরাদ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাম্পান হোটেলের ক্ষতিকর প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলার কারণে আমাদের জমিতে চাষাবাদের অনুযযোগি হয়ে পড়বে বলে আশংকা করছি। পলিথিন ও প্লাস্টিকের কারণে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যাবে। ময়লা ফেলা বন্ধ করতে একাধিকবার বললেও তারা তা শুনছেন না। বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে ফসলি জমির চাষাবাদ অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
পিংগলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোর্শেদ আলী খান বলেন, বর্জ্যরে পঁচা গন্ধে আমাদের নাক চেপে চলাচল করতে হচ্ছে। এই বর্জ্য থেকেই পরিবেশে দূষন ছড়িয়ে পড়ছে। তাই যত্রতত্র এই বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। হোটেল কর্তৃপক্ষকে ডাম্পিং স্থাপন করে এ বর্জ্য ধবংস করতে হবে।
অভিযোগের বিষয়ে সাম্পান হাইওয়ে ইন রেস্টুরেন্টের ইনচার্জ জোহান আহমেদ বলেন, ‘আপনার (সাংবাদিকের) মাধ্যমে বিষয়টি যেহেতু জানলাম, ওখানে আর ময়লা ফেলবো না। বিষয়টি আমি দেখতেছি কি করা যায়।’
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, এ বর্জ্য স্থানীয় পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ ব্যবস্থাপনা করে থাকে। যত্রতত্র এ বর্জ্য ফেলা যাবে না। এ বিষয়ে আমরা সাম্পান হাইওয়ে ইন রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব। পরিবেশ দূষন রোধে তাদের সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আমরা অবহিত করব। সেভাবে না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।