ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুরে লাম্পি স্কিন রোগে ৫ শতাধিক গরুর মৃত্যু

রংপুরে লাম্পি স্কিন রোগে ৫ শতাধিক গরুর মৃত্যু

রংপুরে গরুর লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব পড়েছে। এক মাসে জেলায় পাঁচ শতাধিক গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। খামারী ও গৃহস্থদের সচেতনতা করতে মাঠ পর্যায়ে প্রাণি সম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা কাজ করছে ।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের আট উপজেলায় ছোট-বড় গরুর খামার রয়েছে ১ হাজার ৬৬৮টি। গৃহপালিত গরু রয়েছে আরও প্রায় ১০ লাখ। জেলা-উপজেলার হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন গড়ে দেড় শতাধিক লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ বছর ছোট বকনা বাছুরগুলোতে এ রোগের প্রকোপ বেশি।

জানা গেছে, লাম্পি স্কিনের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি কাউনিযা ,পীরগাছা , বদরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলায়। গত এক মাসে বদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ খামারপাড়া গ্রামের রাজ্জাক ও মহেবুল এবং ঠনঠনিয়াপাড়া গ্রামের রজব আলীর ও ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আব্দুল আহারের দুটি করে গরু মারা গেছে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে। এছাড়া দক্ষিণ খামারপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দিন, ডাক্তারপাড়া গ্রামের টিপু ও কবিরাজপাড়া গ্রামের আক্তার হোসেনের গরু মারা গেছে তিনটি করে। এই উপজেলার অন্তত আরও ৫০ জনের কমপক্ষে একটি করে গরু মারা গেছে। খামারিদের দাবি, সব মিলিয়ে উপজেলয় অন্তত ৩০০ গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

গত সোমবার (১০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে বদরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে অন্তত ১৫টি গরুকে দেখা যায় যেগুলোকে লাম্পি স্কিন রোগের চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল। কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. আবু মুছা একা সেগুলোকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। সেখানে চিকিৎসার জন্য অপেক্ষমাণ অবস্থাতেই একটি গরুর মৃত্যু হয়। ওই সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আজমল হুদা তপন উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় যোগ দিতে ইউএনও কার্যালয়ে ছিলেন।

ডা. আবু মুছা বলেন, ‘আমার কার্যালয়ে প্রতিদিনই ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত ১৫-২০টি করে গরু আসছে। এগুলোকে একা একা চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বাইরে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ নেই।’

মিঠাপুকুরেও লাম্পি স্কিন রোগে অর্ধশত গরুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ১৭টি ইউনিয়নের প্রায় সব জায়গায় এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সামনে গিয়ে দেখা যায়, অটোরিকশা ও ভ্যানে করে আক্রান্ত গরু নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছেন লোকজন।

মিঠাপুকুরে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা একরামুল হক বলেন, লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুকে চিতিৎসা দেয়া হচ্ছে । লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর মাংস খাওয়া ঠিক নয়। কারণ রোগটি মাংসের মাধ্যমে মানুষের শরিরে প্রবেশ করতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত গরু জবাই ও মাংস বিক্রির বিষয়টি জানিনা। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. বলরাম কুমার বলেন, এ বছর গরুর বাছুরে ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রকোপ বেশি। প্রতিদিন জেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে এ রোগে আক্রান্ত গরু আসছে গড়ে ৩০টি। একা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন,জেলায় লাম্পি স্কিন রোগে গরু আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন এ পর্যন্ত ৮শ গরু আক্রান্ত হয়েছে । তিনি আরও বলেন গত ১ সম্পাহে ৭ গরু মারা গেছে । আমারপ্রাণি সম্পদ দপ্তরে পিয়ন নেই । ড্রাইভার নেই । জনবল খুবই সংকট । সঠিক তথ্য দেয়া খুবই কঠিন। চার উপজেলা কাউনিযা ,পীরগাছা ,মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সচেতনা সৃষ্টির জন্য প্রতিদিন গৃহস্থ ও খামারীদের পরামর্শ দিচ্ছে । তিনি বলেন শিগ্রিরই ঢাকা থেকে একটি বিশেষ পরিদর্শন টিম পরিদর্শনে আসবে বলে জানান ।

স্কিন,রোগ,প্রাদুর্ভাব
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত