সাতক্ষীরার নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজ প্রতাপ দাসকে চড় থাপ্পড় মারার পর অভিমানে আত্মহত্যার ঘটনায় স্কুলটিতে ভাংচুর করে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার (১৬ জুলাই) দুপুরের পর থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ শিক্ষকদের উদ্বৃতি দিয়ে জানান, রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে নলতা হাইস্কুলের এক্সটেনশন ভবনে কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী তাদের এক বন্ধুর জন্মদিনের কেক কাটছিল।
স্কুলের শিক্ষকরা বিষয়টি জানতে পেরে তাদেরকে বকাঝকা ও চড় থাপ্পড় মারে এবং তাদের অভিভাবকদের জানায়। এ ঘটনার পর বেলা সোয়া ১২ টার দিকে নবম শ্রেণির ছাত্র কালিগঞ্জ উপজেলার হিজলা চন্ডিপুর গ্রামের দীনবন্ধু দাসের ছেলে রাজ প্রতাপ দাস বাড়িতে যেয়ে
বিষপান করে। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথিমধ্যে মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা জানান, রাজ প্রতাপ স্কুলের নিয়ম ভেঙে কয়েকজন বন্ধুদের নিয়ে জন্মদিন পালন করছিলেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক অবকাশ সরকার, সিদ্ধার্থসহ কয়েকজন শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ডেকে নিয়ে মারপিট করে। এতে প্রতাপ বাড়ি গিয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তাকে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে কালিগঞ্জ উপজেলা নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম জানান, কোন ছাত্রকে মারপিট করা হয়নি। বকাঝকা করা হয়েছে। স্কুলের নিয়ম ভেঙে তারা শ্রেণির কক্ষের সামনে জন্মদিন পালন করছিল। আমার স্কুলে যেতে দেরি হওয়ায় একজন শিক্ষক আমাকে ফোন দিয়েছিল। পরে আমি স্কুলে গিয়ে তাদের অভিভাবকের কাছে ফোন করি।
তিনি আরও জানান, কিন্তু কারো অভিভাবক আসেনি। শুধু মাত্র প্রতাপের কাকা সেখানে আসলে স্কুলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে তাকে বকাঝকা করা হয়। পরে শুনছি সে নাকি মারা গেছেন। হয়ত বাড়ি গিয়ে সে আত্মহত্যা করতে পারে। কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নাজমুল নাঈম জানান, আমি যতদূর শুনেছি স্কুলের নিয়ম ভেঙে জন্মদিন পালন করায় কয়েকজন শিক্ষক প্রতাপসহ তার বন্ধুদের মারপিট করে। এরপর বাড়ি গিয়ে প্রতাপ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। মারপিটের কারনেই সে মারা গেছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রাজ প্রতাপের মৃতদেহ নিয়ে শিক্ষার্থী স্কুলে যেয়ে ভাংচুর এবং বিক্ষোভ শুরু করে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা স্কুলটিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমিনুর রহমান জানান, পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।