শেরপুরের নকলা উপজেলার ৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এরমধ্যে, ২৯টি বিদ্যালয় ও ১৯টি মাদ্রাসাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি)-এর অন্তর্ভুক্ত স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিমের ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কার্যক্রম প্রাথমিক ভাবে শুরু হয়েছে।
এরই মধ্যে, উপজেলার মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের ২৯টি বিদ্যালয় এবং ১৯টি মাদ্রাসার প্রধান/সুপারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সংগঠকগনের অংশ গ্রহনে দিনব্যাপি উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এখন চলছে, সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন। পরিদর্শনকালে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সংগঠকগনকে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে, সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে, পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ ইব্রাহিম হাসান ৫দিনের সফরে উপজেলার ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সংগঠকগনকে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন।
অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ ইব্রাহিম হাসান ৯ জুলাই (রবিবার) থেকে ১৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ৫দিনে প্রতিদিন ৩টি করে উপজেলার মোট ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সংগঠকগনকে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করার পাশাপাশি সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা করেছেন।
তথ্য মতে, ময়মনসিংহ বিভাগের ৪টি জেলার নকলা উপজেলাসহ মোট ২০টি উপজেলায় এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। করোনা অতিমারীর কারনে কয়েক বছর এই কার্যক্রম বন্ধ থাকার পরে নতুন করে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি দেশের ৬৪ টি জেলার ৩০০ টি উপজেলায় ১৫ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায় শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় প্রতি বছর প্রায় ২৫ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী উন্নতমানের বই পড়ার সুবিধা পাবে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র উক্ত কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করছে।
ইতোমধ্যে দেশের ৫টি বিভাগে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা) কর্মশালা সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এখন ময়মনসিংহ বিভাগের ২০টি উপজেলার একহাজার একশত পঁয়তাল্লিশ (১,১৪৫) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির বই পড়া কার্যক্রম প্রাথমিক ভাবে শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সদস্য সংখ্যার তালিকা পাওয়ার পরেই সকল প্রতিষ্ঠানে বই প্রেরণ করা হবে। এরপরেই শুরু হবে বই পড়া কার্যক্রম; এমনটাই জানান পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ ইব্রাহিম হাসান।
এরফলে ময়মনসিংহের অন্তত এক লক্ষ চুরানব্বই হাজার ছয়শত পঞ্চাশ (১,৯৪,৬৫০) জন ছাত্র-ছাত্রী চলমান স্কিমের তালিকা ভুক্ত বই গুলো পড়ে নিজেদের মূল্যবোধ সম্পন্ন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে বলে সংশ্লিষ্টজন মনে করছেন।
উপজেলার বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. শহিদুল ইসলাম ও গণপদ্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ নাজমুল ইসলাম জানান, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কার্যক্রম দীর্ঘ্যদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত পাঠ্য বই ছাড়া বাহিরের তথা জ্ঞান মূলক বই পড়ার অভ্যাস ভুলে গেছিলো। পুনরায় এখন এই কর্মসূচি চালু হওয়ায় দেশের অগণিত শিক্ষার্থী পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির তালিকা ভুক্ত মূল্যবান বই গুলো পড়ার মাধ্যমে নিজেদের আদর্শ, সমৃদ্ধ, মানবিক ও মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। এই কর্মসূচি স্থায়ী করনের দাবী জানান তাঁরা।