উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে সোনা মিয়া হত্যাকান্ডের অভিযোগ করে রংপুরে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৩, ১০:৫০ | অনলাইন সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

রংপুরের কাউনিয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া’র নির্দেশে সোনা মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগের একটি অংশ।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নব্বই দশকের ছাত্রলীগের মুখপাত্র আশরাফুল আলম লিখিত বক্তব্যে এই অভিযোগ করেন।  

তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিএনপি কর্মী সোনা মিয়াকে হত্যা করে আওয়ামী লীগ কর্মী বানানো ও হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের দূর্দিনে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতৃত্বদানকারী কাউনিয়া উপজেলার ৭৬ জনকে আসামী করে উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তাবায়ন করছে। পরিকল্পিতভাবে হেলমেটধারী সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে বিএনপি কর্মী সোনা মিয়াকে হত্যা করিয়েছেন তিনি। সেই সাথে রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনের এমপি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে ভোটের আগে বিতর্কিত করে এমপি মনোনয়ন নেওয়ার কৌশল হিসেবে এ হত্যাকান্ডের মূল উদ্দেশ্য।

এ পরিকল্পিত হত্যাকান্ডকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মায়া হারাগাছ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান কাউনিয়া উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান পলাশের মাধ্যমে সোনা মিয়ার পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছে। সেই সাথে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকসহ ৭৬ জনের মধ্যে বিরুদ্ধে তিনি মামলা করিয়েছেন। এ মামলায় তিন জন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ৩ জন ইউপি সদস্য, ২ জন সহকারী অধ্যাপক, ৫ জন প্রভাষক, সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তারা অধিকাংশই ঘটনার দিন ঢাকা, কাউনিয়া উপজেলা, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও উপযুক্ত বিচারের দাবী জানানো হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহঃসভাপতি সাইফুল ইসলাম সেলিম, সদস্য, হাবিবুর রহমান হাবীব, বালাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিলদার আলী, কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ, টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম, হারাগাছ ইউপি চেয়ারম্যান রাজু আহমেদসহ অন্যরা।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল বিকেলে হারাগাছে কাউনিয়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য যান। বাণিজ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে শ্লোগান নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের নেতাকর্মীদের মাঝে হাতাহাতি-মারামারি ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয়পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর রাতে আবারও খানসামা ইমামগঞ্জ বাজারে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সোনা মিয়া নিহত হন। এ ঘটনায় ২৬ এপ্রিল সোনা মিয়ার ছেলে আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে কাউনিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, তার ভাই হারাগাছ ইউপি চেয়ারম্যান রাজু আহমেসহ ৭৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করে।