বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এক ছাত্রী হোস্টেলের একটি কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলেছে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ।
বুধবার (১৯ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কর্নকাঠির আনন্দবাজার এলাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন মোল্লা ছাত্রী নিবাসের একটি কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম শাহরিন রিভানা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি ডিপার্টমেন্টের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। পিরোজপুর জেলার সোহাগদল এলাকার বাসিন্দা আলতাফ মাসুম ইসলাম শাহীনের মেয়ে তিনি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. খোরশেদ আলম জানান, গত ১৬ জুলাই পরীক্ষায় অংশ নেয় রিভানা। এরপর থেকে রিভানার খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার।
বুধবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে রিভানার মাসহ স্বজনরা তার সন্ধানে ওই ছাত্রী নিবাসে আসেন। রিভানার কক্ষটির দরজা বন্ধ দেখতে পায় তারা। ওই ছাত্রী নিবাসের মালিকের সহায়তায় দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তারা। ভেতরে প্রবেশ করেই মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্বজনেরা। ছাত্রীর মা সাংবাদিকদের জানান, রিভানা প্রায়ই মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতো। দুই দিন আগে ফোনে কথা হয়েছিল।
তখন তাকে বরিশালে ডাক্তার দেখাতে আসার কথা বলেছিলাম। আর তখন বাড়ি যাওয়ার কথা বলে রিভানা ডাক্তার দেখিয়ে তার হোস্টেলে ফিরে যাওয়ার কথা বলেছিল। এদিকে বুধবার হোস্টেলে এসে দেখি রুমের দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ পাইনি। পরে বাসার মালিককে ডেকে এনে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রিভানা ঝুলে আছে। তিনিসহ স্বজনদের দাবি, রিভানা রুমে একা থাকায় প্রায়ই ডিপ্রেশনে ভুগতেন। সে কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া মৃত রিভানার শরীর ফুলে উঠেছে, কিছুটা পচন ধরে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। লক্ষণ দেখে বোঝা যাচ্ছে, ১৬ জুলাইয়ের দিকেই কিছু একটা ঘটেছে। মরদেহের ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক সময় ও কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ঘটনাস্থলে থাকা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্পের এসআই মশিউর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে যেটুকু জেনেছি ওই কক্ষে ছাত্রী একাই থাকতেন। কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস নিয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা। সোমবারের দিকে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। স্বজনদের বরাতে তিনি জানান, ডিপ্রেশনের কারণে আত্মহত্যা করতে পারে রিভানা। এদিকে এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হবে জানিয়ে এসআই মশিউর রহমান বলেন, পরিবার ময়নাতদন্ত চায় না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা যে সিদ্বান্ত দেবেন, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।