নয়া শতাব্দীর পাবিপ্রবি প্রতিনিধিকে পিটিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগ 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে প্রেসবিজ্ঞপ্তি দেয়ায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার (২৩ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে পাবিপ্রবির ক্যাফেটেরিয়ায় এঘটনা ঘটে।  

আহত সায়বাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক নয়া শতাব্দীর পাবিপ্রবি প্রতিনিধি এবং পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম-আহবায়ক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ৩য় বর্যে শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সদস্যরা জানান, স¤প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক সাংবাদিককে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তি দেয় পাবিপ্রবি প্রেসক্লাব। 

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কুমারকে রবিবার (২৩ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে পাবিপ্রবি ক্যাম্পসের ক্যাফেটেরিয়ায় আটক রাখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন সংবাদের সত্যতা যাচাই ও তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান আব্দুল্লাহ আল মামুন। এসময় মামুনকেও আটকে রেখে প্রেসবিজ্ঞপ্তি বিষয়ে জানতে যান নেতাকর্মীরা। 

এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বেধড়ক পেটায়। এতে নেতৃত্বদেন পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম প্রান্থ, সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ রানা সরকার, সাবেক প্রচার সম্পাদক ইকরামুল ইসলাম সাগর, তৌফিকুল ইসলাম হৃদয়সহ ২০-২৫ জন নেতকর্মীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সহযোগিতা চাইলে তিনি এসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ ও প্রেসক্লাব নিয়ে সাংবাদিকদের উল্টো নানা প্রশ্ন করেন। পরে প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কুমারকে দিয়ে একটি অভিযোগপত্রে জোর করে স্বাক্ষর রেখে তাদের  ছেড়ে দিলে আহত মামুনকে নিয়ে হাসপাতালে যান তার সহকর্মীরা।

পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের আহবায়ক উজ্জল কুমার বিশ্বাস বলেন, এঘটনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। শুধু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বয়ং প্রক্টর যদি তাদের (ছাত্রলীগের) পক্ষ নিয়ে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এব্যাপারে পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম প্রান্থ এবং সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ রানা সরকারের বক্তব্য নিতে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. কামাল হোসেন বলেন, প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কুমার আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। এসময় আব্দুল্লাহ আল মামুন আমার কাছে এসে তাকে মারধরের অভিযােগ করেন কিন্তু আমি তাকে বলেছি লিখিত আকারে অভিযোগ দিতে। লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দেখা হবে। ওইখানে ছাত্র উপদেষ্টাসহ অনেকেই ছিল তাই পক্ষ নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। অসহযোগিতার অভিযোগ মিথ্যা।
এ ব্যাপারে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হাফিজা খাতুন বলেন, এব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমাদের তো নিরাপত্তা কর্মকর্তা আছে। বললে তারাও দেখবে। তারপরও আমি এব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি।

এদিকে এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদ, পাবনা রিপোর্টর্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান স্বপন, সম্পাদক কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলাসহ পাবনায় কর্মরত সকল গণমাধ্যম কর্মীগণ। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ঘটনার সাথে জরিতদের কঠোর শাস্তির দাবী করেছেন।