নেত্রকোণায় স্বামীর হাতে সাবেক স্ত্রী খুন

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩, ১৪:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ

  নেত্রকোণা প্রতিনিধি

নেত্রকোণার কলমাকান্দা থেকে আম্বিয়া খাতুন (৪০) নামের এক গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

রোববার সকালের দিকে ওই উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামের নিজবাড়ির বসত ঘর থেকে এই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে  সাবেক স্বামী আব্দুল মজিদকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার মজিদ একই বাড়ির আবুল কালাম খোকা মিয়ার ছেলে। 

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. লুৎফুর রহমান রোববার সাড়ে বিকেল তিনটার দিকে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
  
এলাকাবাসী জানায়, আব্দুল মজিদের বড় ভাই হাবিবুর রহমানের সাথে আম্বিয়া খাতুনের প্রথম বিয়ে হয়েছিল। তাদের সংসারে তিন ছেলেও আছে। প্রায় তিন বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায়  হাবিবুর রহমান মারা যান। পরে দেবর আব্দুল মজিদের সাথে বিয়ে হয় আম্বিয়ার। এরপর থেকে আগের স্বামীর ঔরসজাত ৩ ছেলেসহ বসবাস করতে থাকে আম্বিয়া। আব্দু মজিদ কোন কাজ-কর্ম করত না। 

বিয়ে কিছুদিন যাওয়ার পর মজিদ রাতে নেশাগ্রস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে তার স্ত্রী আম্বিয়ার উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার শুরু করে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে আম্বিয়া বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় গিয়ে মানুষের বাসায় কাজ নেয়। দুই ছেলেও ঢাকায় কাজ নেয়। অপর এক ছেলে ময়মনসিংহের একটি মাদ্রাসায় পড়া-লিখা করে। আম্বিয়া মাঝে-মধ্যে বাড়ি আসে। এ সময়ই তিনি স্বামী মজিদের অত্যাচারের শিকার হয়। এই পরিস্থিতিতে প্রায় তিন মাস আগে গ্রাম শালিসে উপস্থি হয়ে স্বামীকে তালাক দেয় আম্বিয়া। এতে ক্ষিপ্ত হয় মজিদ। শনিবার রাতে দায়ের কোপে নিহত হয় আম্বিয়া।

পুলিশ জানায়, ঘটনার পর মজিদ থানায় এসে আম্বিয়া নিহতের খবর জানায়। এ সময় তিনি পাড়ার অন্য একজনকে দোষারোপ করেন। তার কথাবার্তায় সন্দেহ হলে পুলিশ এলাকায় গিয়ে খোঁজ-খবর নেয়। পরে মজিদকে গ্রেফতার করা হয়।

আম্বিয়া  খাতুনের বড়ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, আব্দুল মজিদ নেশাগ্রস্ত ও বখাটে ছিলো । সড়ক দুর্ঘটনায় আগের স্বামী  নিহত হওয়ার পর মজিদের কাছে বিয়ে বসতে তাকে না করেছি । আমার বোনও এতে রাজি ছিল না। মজিদ তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজি করায়। 

বিয়ের পর থেকেই মজিদ আমার বোনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে  নির্যাতন করে আসছিল। এনিয়ে সামাজিকভাবে দেনদরবারও হয়েছে। কোনকিছুতেই কাজ হয় নাই। অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য আমার বোন গত তিনমাস আগে তার স্বামীকে তালাক দেয়। এরপরও সে রক্ষা পেল না সে গত শুক্রবার বাড়ি আসলে মজিদ তাকে নির্মভাবে হত্যা করে। আমি এর বিচার চাই।