ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রধানমন্ত্রীর আগমনে স্বপ্নপূরণের আশায় রংপুরবাসী

প্রধানমন্ত্রীর আগমনে স্বপ্নপূরণের আশায় রংপুরবাসী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২ আগস্ট বুধবার রংপুরে আসছেন। সেদিন রংপুর জেলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন সরকারপ্রধান।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির হিসেব মিলাতে শুরু করেছে রংপুরের মানুষ। শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এসময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুইটি নির্বাচনী জনসভা করেছেন। এরপরে আর তিনি রংপুরে আসেননি।

সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় পর শেখ হাসিনা রংপুরে আসছেন। তিনি দ্বাদশ নির্বাচনের প্রচারণা রংপুর থেকে শুরু করবেন দলীয় সূত্র থেকে এই তথ্য জানা গেছে। তাই রংপুরবাসি শেখ হাসিনাকে বরণ করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। জনসভায় ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় রংপুর বিভাগের ৫৮টি উপজেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ আনার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় বর্ধিত সভা করা হয়েছে। ওই সভায় ৪ মন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী জনসভা করার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

এদিকে বর্তমান সরকারের আমলে রংপুরের যে সব উন্নয়ন হয়েছে এসবও জনগণের নিকট তুলে ধরছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাুসিনার আমলে রংপুর বিভাগ, সিটি করপোরেশন, মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ বছরের ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরের উদ্বোধন করেছেন।

এছাড়া রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিন একাডেমি, উপজেলাগুলোতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণসহ নানা উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে। এলেঙ্গা-রংপুর ছয়লেন মহাসড়কের কাজ চলমান। পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এসব উন্নয়নের ফিরিস্তি জনগণের কাছে তুলে ধরছেন দলের একাধিক নেতা।

দলীয় নেতারা বলছেন, ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের এক জনসভায় উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই থেকে প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন আর উন্নয়নের মোড়কে একসময়ের ‘মঙ্গাপীড়িত’ রংপুরকে বদলে দিয়েছেন।

২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের মধ্যদিয়ে বদলে যেতে থাকে রংপুর। এরপর টানা তিনবার সরকারে থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা, রংপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, পীরগঞ্জে মেরিন একাডেমি স্থাপন, আদালতের বহুতল ভবন, সিভিল সার্জনের নতুন ভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, বিভাগীয় সদর দফতর, রংপুর শিশু হাসপাতাল ও পুলিশ হাসপাতাল, আধুনিক পুলিশ লাইন্স নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য রংপুর এখন উত্তরাঞ্চলের রাজধানী।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ১৭ তলাবিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ, র‌্যাব-১৩ ব্যাটালিয়ন সদর দফতরসহ বিভিন্ন সরকারি অবকাঠামো। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষের ভাগ্যবদলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফরকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে আশায় বুক বাঁধছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ।

তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষ এবং তিস্তা নিয়ে যারা আন্দোলন করে আসছেন, তাদের আশা প্রধানমন্ত্রী রংপুরের জনসভায় বহু আকাঙ্ক্ষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো সুখবর নিশ্চয়ই দেবেন। কারণ, পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় তিস্তা এখন উত্তরের মানুষের দুঃখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছর বন্যা এবং খরায় নদীপাড়ের মানুষের দীর্ঘশ্বাস দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তিস্তার দুই পাড়ের লাখ লাখ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে পারে একমাত্র মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে তিস্তাপাড়ের মানুষের পানির জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না।

তিস্তার কোলেপিঠে থেকে প্রতি বছর বন্যায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা এবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরুর আকুতি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, আমরা ত্রাণ চাই না। আমাদের নদী খনন করা হোক। বাঁধ দেওয়া হোক। শুনেছি চীনের সঙ্গে সরকার চুক্তি করবে। তিস্তাপাড়ের দুই ধারে খনন, বাঁধ, বড় বড় রাস্তা করবে। শহরের মতো এখানে বিদেশিরা আসবে, পর্যটন স্পট হবে। তিস্তাপাড় হয়ে উঠবে পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের সুকিয়ান সিটির মতো সুন্দর নগরী। আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ দেখতে চাই। প্রধানমন্ত্রী

রংপুর,প্রধানমন্ত্রী,আগমন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত