‘ধামরাইয়ে এক বিঘা জমির লাউগাছ কাটল দুর্বৃত্তরা’
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৩, ২১:১৭ | অনলাইন সংস্করণ
ধামরাই( ঢাকা) প্রতিনিধি
ঢাকার ধামরাইয়ে রাতেরবেলায় এক বিঘা জমির লাউগাছ কেটে দিয়েছেন দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (২৬ জুলাই) উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের খরারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দিবাগত রাতে ধামরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শফি সিকদারের মেয়ে তহিরুন আক্তার। অভিযুক্তরা হলেন- আব্দুস ছালামের ছেলে জামাল (৪০), শুকুর আলীর ছেলে ফিরোজ মিয়া (৩৮), মালেক মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া (২৩), জামাল মিয়ার ছেলে আশরাফ (২১) ও মো. আলেমের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪২)। তারা সবাই রোয়াইল ইউনিয়নের খরারচর গ্রামের বাসিন্দা।
কৃষক শফি সিকদারের দাবি, মারামারির ঘটনায় মামলা করায় বিবাদীরা রাতে তার ১ বিঘা জমির লাউগাছ কেটে দিয়েছেন। এতে তার ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঋণের টাকা পরিশোধের কথা ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তিনি। অন্যদিকে, বিবাদীদের দাবি, তাদের মামলায় ফাঁসাতে নিজেদের লাউগাছ নিজেরা কেটেছে তারা।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, শফি সিকদার ও ফিরোজ গংদের সঙ্গে জায়গা জমি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে কোর্টে মামলা চলছে। এরই মধ্যে ফিরোজ, জামাল, সুজন, মিলে সেই জমি দখল করতে গেলে শফি সিকদার ও তার ভাতিজা বাধা দেয়। পরে জামাল ও ফিরোজরা মিলে শফি ও তার ভাতিজা মালেককে বেধরক পিটিয়ে আহত করে। পরে সেই ঘটনায় তারা ধামরাই থানায় একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আসামিরা হাজিরা না দিলে তাদের রিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়। এই খবর পেয়ে আসামিরা রাতে শফি সিকদারের এক বিঘা জমির লাউগাছ কেটে ফেলে।
শফির ভাতিজা আব্দুস ছালাম বলেন, ‘জমি নিয়ে মামলা থাকা সত্ত্বেও জামাল ফিরোজ গংরা আমাদের জমি দখল করার চেষ্টা করে। আমি সেখানে বাধা দিলে তারা সাবল দিয়ে আমার মাথা ফাটিয়ে ফেলে। আমি ২২দিন ধামরাই সরকারি হাসপাতালে ছিলাম। এই ঘটনায় আমি থানায় মামলা দায়ের করি। সেই মামলায় ফিরোজ ও জামাল গংরা হাজিরা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে কোর্ট। সেই কারণে রাতের আঁধারে আমার চাচার ধরন্ত লাউগাছ কেটে ফেলেছে ফিরোজ ও জামাল গংরা।
জমির মালিক শফি সিকদার বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ এনজিও থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে দুই বিঘা জমি দাইশুধি (বন্ধক) রেখেছি। সেই জমিতে লাউগাছ লাগিয়েছি। লাউয়ের ফলনও খুব ভালো হয়েছে। আশা করেছিলাম ৫ লাখ টাকার লাউ বিক্রি হবে। লাউ বিক্রি করে এনজিওর ঋণ পরিশোধ করতে ছিলাম। এরই মধ্যে জামাল ও ফিরোজরা মিলে আমার সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। আমি এখন কীভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করব।’
ফিরোজ ও জামালদের না পেয়ে কথা হয় আরেক আসামি সুফিয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শফি সিকদারের খেতের লাউগাছ কাটিনি। তারা নিজেদের লাউগাছ নিজেরা কেটে আমাদের নামে মিথ্য মামলা করার ফন্দি করছে।’
ধামরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এক বিঘা জায়গার ধরন্ত লাউগাছ কাটার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’