জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমানের একটি কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে গত কয়েকদিন যাবত। সেই কল রেকর্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পদ্মা সেতু নিয়ে কটুক্তি করতে শোনা যায় তাকে। এরপর থেকেই উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নিন্দার ঝড়। প্রধানমন্ত্রী ও পদ্মা সেতুকে নিয়ে কটুক্তি করায় তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন অনেকে।
১০ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের কল রেকর্ডের অপর প্রান্তে ছিলেন একজন নারী। কল রেকর্ডে শোনা যায় সেই নারী নিজেকে সিদ্দিক চেয়ারম্যানের সাবেক স্ত্রী হিসেবে দাবী করছে। সম্পূর্ণ কথোপকথনে সেই নারীর সাথে সিদ্দিক চেয়ারম্যানের শারীরিক সক্ষমতা,পারিবারিক ও ব্যবসায়িক আলাপ হয়। সেখানে সেই নারী তার সন্তানকে দেখাশুনা করার জন্য সিদ্দিক চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন। এছাড়াও নিজের মোবাইলে একজন নারীর সাথে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও থাকার কথা জানান সিদ্দিক চেয়ারম্যান। কল রেকর্ডটির ৭ মিনিটের পর সেই নারী সিদ্দিক চেয়ারম্যানের ব্যবসার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারনে জানতে চাইলে সিদ্দিক চেয়ারম্যান বলেন-“বাংলাদেশে কি ব্যবসা আছে? সবকিছুতো শেখ হাসিনা খায়ে পদ্মা সেতুর মধ্যে নিয়ে গেছে গা।”
কলরেকর্ডটি ভাইরাল হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পদ্মা সেতু নিয়ে মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমানের এমন মন্তব্যে হতবাক উপজেলার সুধী সমাজ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন- “দেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা চলে তখন নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচিত হয়ে একজন চেয়ারম্যান কিভাবে এমন কথা বলেন? এছাড়াও তিনি উপজেলা যুবলীগের সদস্য। এখন দল যদি ব্যবস্থা না নেই, তাহলে অনেকেই এমন কাজ করার সাহস পাবে। তাই দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত।”
তবে মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন- “যে কল রেকর্ডটি ভাইরাল হয়েছে সেটি আমার না। এটি সম্পূর্ন এডিট করা। গত ১০ বছরের মধ্যে কারো সাথে আমার এমন কথা হয়নি। আর আমার কোনো ২য় স্ত্রী বা সন্তান নেই।”
চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান আরো বলেন- “ আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য একটি পক্ষ এসব করছে। আমার এলাকার বিএনপি-জামায়াত এসব করে থাকতে পারে বলে আমি সন্দেহ করছি। যারাই এই কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ”
জামালপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজু বলেন- “তার কল রেকর্ডটি আমি এখনো শুনি নাই। তার কল রেকর্ডটি আমি শুনবো। তিনি যদি উপজেলা যুবলীগের সদস্য হয়ে থাকে আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে কটুক্তি করে থাকে তাহলে আমি সাংগঠনিক নিয়মে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।”
বকশিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহান বলেন-“আমি বিষয়টি অবগত নই। মাত্রই আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম। বিষয়টি আমি খোজ নিচ্ছি।”
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে স্থানীয় একজন সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে।