পাবনায় খরার কবলে আমন ধানের চারা রোপণ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। শ্রাবণ মাসের অর্ধেক পার হয়ে গেলেও মৌসুমী বৃষ্টির দেখা নেই। মাঝে মধ্যে সামান্য ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হলেও তা তেমন কোনো কাজে আসছে না কৃষকদের।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১লাখ ৮০হাজার ২১৭টন উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরে ৫৫ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে (২.৮.২৩) ১২ শতাংশ জমিতে আমন ধানের চারা লাগানো হয়েছে। সেচের জন্য জেলায় গভীরনলকুপ, অভীরনলকুপ ও এলএলপিসহ (লো লিফট পাম্প) ২ হাজার ২৫৩টি সেচযন্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে ৭শ৮৩টি বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্র। বাকি ১ হাজার ৪৭০টি সেচযন্ত্র ডিজেলচালিত। খরা মোকাবিলায় বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্রের প্রায় সবগুলোই চালু রাখা রয়েছে।
পাবনা সদর, ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া ও সাঁথিয়া উপজেলার কয়েকজন কৃষক জানান, সেচের কারণে চলতি বছর বিঘা প্রতি অতিরিক্ত তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ হচ্ছে আমন চাষিদের। আমন আবাদে জমি প্রস্তুত ও ধানের চারা বাঁচাতে কৃষকদের ভরসা ভূগর্ভস্থ পানি। এতে খরচ বাড়ছে তাদের।
সাঁথিয়া উপজেলার তৈলকুপী গ্রামের কৃষক তমিজ উদ্দিন জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে এলাকায় ছিটে ফোটা বৃষ্টি হলেও মাটি ভেজেনি। ফলে চারা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করা জমির মাটি ফেটে যাচ্ছে। যেসব জমিতে চারা লাগানো হয়েছে, পানির অভাবে ওই সব চারা মরে যেতে বসেছে। খরার কারণে মাটি শুকনা কাঠের মতো হয়ে থাকায় সেচ দিয়ে মাটি ভেজাতে অনেক বেশি পানি লাগছে। আমনের চারা লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত ও খরার কবলে পড়া আমনের চারা বাঁচাতে ইতিমধ্যে দুবার সেচ দিতে হয়েছে। এই মৌসুমে এভাবে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত চললে কমপক্ষে আরও ছয়বার সেচ দিতে হবে। কৃষকরা আরো জানান, একদিকে খরা, আরেক দিকে চলছে লোডশেডিং। এক বিঘা জমিতে বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে সেচ দিতে বর্তমানে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ছে।
পাবনা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জামাল উদ্দীন বলেন, আমনের মৌসুম কেবলই শুরু হয়েছে। আগস্ট মাসজুড়েই আমনের চারা লাগানো যাবে। ইতিমধ্যে ১২ শতাংশ জমিতে চারা লাগানো সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, সঠিক সময়েই আমনের চারা লাগানো সম্পন্ন হবে। তবে যেসব কৃষক সেচ দিয়ে চাষাবাদ করছেন, তাঁদের খরচ বাড়বে। গত বছরেও মৌসুমের শুরুতে তেমন বৃষ্টি ছিল না। তবে শেষের দিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছিল। তবে বর্তমানে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বর্ষার পানি চলে আসছে। আশা করছি এ সমস্যা থাকবে না।