ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উখিয়ায় দেশীয় মুরগী পালন করে দারিদ্রতা বিমোচনে সফলতা

উখিয়ায় দেশীয় মুরগী পালন করে দারিদ্রতা বিমোচনে সফলতা

কক্সবাজারের উখিয়ায় দেশীয় মুরগী পালন করে দারিদ্রতা বিমোচনে সফল হয়েছে ১২৫৬ পরিবার। আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসায় তাদের ছেলে-মেয়েদেরও লেখাপড়া শিখানো সম্ভব হচ্ছে। স্বাবলম্বী হয়ে পুরো পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসায় তাদের পরিবারে হাসি ফুটেছে এবং দেখছে সুখের আলো।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মুক্তি কক্সবাজার এর সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে দেশীয় মুরগী পালন করে এই পরিবার গুলো স্বাবলম্বী হওয়ার এই সফলতা অর্জন করেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উখিয়া উপজেলার রাজা পালং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলী গ্রামের মৃত নুর আহমদের স্ত্রী সাজেদা বেগম স্বামীর অকাল মৃত্যু হলে ৫ ছেলে-মেয়ে নিয়ে সংসারে অভাব অনটন শুরু হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মুক্তি কক্সবাজার এর সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ ও উক্ত সংস্থার দেয়া দেশীয় মুরগী পালন করে এখন স্বাবলম্বী হয়েছে। বর্তমানে তার রয়েছে ৫০ টির মত মোরগ-মুরগী। বাজারে বিক্রি করে আয়কৃত অর্থ দিয়ে সবজি ও ধান চাষ করে অভাব অনটন দূর হয়েছে। আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসায়, তার ছেলে-মেয়েদেরও লেখাপড়া শিখানো সম্ভব হয়েছে ।

একই এলাকার মৃত আব্দুল হালিমের স্ত্রী জারিয়া খাতুন বলেন, দেশীয় মুরগী পালন করে আর্থিক স্বাবলম্বী হয়ে গবাদি পশু পালন শুরু করেছি।

তার প্রতিবেশী রোকেয়া বেগম ও সাবেকুন্নাহার সহ আরও অনেকে জানান, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে দেশীয় মুরগী পালন করে দারিদ্র বিমোচনে তারা সফলতা পেয়েছে। তাদের পরিবারে হাসি ফুটেছে ও সুখের আলো দেখতেছে। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ হয়েছে।

তারা আরও জানান, মুরগী পালনে সফল হয় তাদের পরিবারে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ, বাড়ির আসবাবপত্র সংগ্রহ ও ছাগল গরু ক্রয় করেছে। এমনকি ধান চাষ ও সবজি ক্ষেত করার জন্য জমি লিজ নিয়েছে এসব পরিবার ।

এনজিও সংস্থা মুক্তি কক্সবাজার এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ ওসমান গনি জানান, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর অর্থায়নে আইপিসিওএসও কর্মসূচির আওতায় রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ক্ষতিগ্রস্ত অতি দরিদ্র পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে এ প্রোগ্রাম শুরু করে। এ পর্যন্ত রাজাপালং ও পালংখালী ইউনিয়নের ১২৫৬ পরিবারকে উপকারভোগী হিসাবে নির্বাচিত করে তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও দেশীয় মুরগি বিতরন করা হয় । প্রতিটি পরিবারকে ১৬ টি মুরগী ও ৪ টি মোরগ দেয়ার পাশাপাশি ২ তলা বিশিষ্ট মুরগী পালনের ঘর, মুরগীর খাবারের পাত্র ও ২০ কেজি মুরগীর খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

প্রজেক্ট অফিসার আবিদা সুলতানা লিজা জানান, বিগত ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া ২০২৩ সাল পর্যন্ত চলমান এ কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র পরিবারগুলো কে স্বাবলম্বী করতে দেশীয় মুরগি পালনের মাধ্যমে উদ্যোক্তা সৃষ্টির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রয়োগে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে । এছাড়াও উদ্যোক্তাদের খামারের মুরগী বিক্রি করতে মার্কেটিং লিংকেইজ করা হয়।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের মতে মতে, দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে মুক্তি কক্সবাজার এনজিও সংস্থার এ ধরনের কর্মসূচি উখিয়া উপজেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

মুরগী,পালন,উখিয়া
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত