ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে রেলের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি

নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে রেলের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি

নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে রেলের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার, রেল ও বগি সংখ্যা এবং যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি এবং রেলওয়ের লুটপাট-দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৪ আগস্ট) বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, ফতুল্লা থানার সভাপতি এম এ মিল্টন, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক এস এম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ আট মাস বন্ধ থাকার পর নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে রেল সার্ভিস চালু হয়েছে। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটের রেল বন্ধ করা হয়। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে গেণ্ডারিয়া অংশে পৃথক রেললাইন নির্মাণ ও নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটের রেলপথ উন্নয়নের কথা বলে রেল চলাচল বন্ধ করা হয়েছিল। কথা ছিল তিন মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে রেল চালু হবে। কিন্তু আট মাস পর জনতার ব্যাপক ক্ষোভের মুখে ১ আগস্ট এ রুটে রেল চালু হয়েছে। কিন্তু রেলের ভাড়া কোনরূপ পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ৩৩.৩৩% অর্থাৎ যেকোনো স্টেশনে ভাড়া আগে যেটা ১৫ টাকা ছিল সেটা ২০ টাকা করা হয়েছে।

তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে মূলত ছাত্র, শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ যাতায়াত করে। বর্তমানে নিত্যপণ্যে দাম আকাশচুম্বি। মানুষের জীবন যাপনের ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষ খাদ্য তালিকা থেকে তাদের খাবার কমিয়ে তারা ব্যয় সমন্বয়ের চেষ্টা করছে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য, কাজ করার জন্য তার প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান হুমকির মুখে। জনজীবনের এই অর্থনৈতিক দুর্দশার সময় স্বল্প মূল্যে চলাচলের জন্য ট্রেনের উপর মানুষ ভরসা করে। এরকম পরিস্থিতিতে ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ রেলের ভাড়া বৃদ্ধি। নারায়ণগঞ্জ থেকে ফতুল্লা, ফতুল্লা থেকে পাগলা, পাগলা থেকে শ্যামপুর, শ্যামপুর থেকে গে-ারিয়া, কমলাপুর একই ভাবে নারায়ণগঞ্জের দিকে যেখানেই যাক ভাড়া তার ৫ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ এরা তাদের কাজের প্রয়োজনে এক স্টেশন এলাকা থেকে আর এক স্টেশন এলাকায় যায়। এদের কারও আয় বাড়েনি। ভাড়া বৃদ্ধির কারণে মাসে হিসাব করলে তাদের অনেক টাকা বাড়তি গুনতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, রেল চালু করলেও নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে রেলের সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। বগির সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। বাস্তবে দীর্ঘ সময় রেল বন্ধ রাখা, রেলের সংখ্যা কমিয়ে চালু করা, বগি সংখ্যা কমিয়ে রাখা, ভাড়া বৃদ্ধি, যাত্রী সেবার নিম্নমান এসব কিছুই এই রুটের স্থলপথের পরিবহনের (বাস, ট্রাক ইত্যাদি) একচেটিয়া ব্যবসায়ীদের সুবিধা করে দেয়ার জন্যই করা হচ্ছে। সাধারণ জনগণের প্রয়োজন সরকারের কাছে চরমভাবে উপেক্ষিত। আমরা দেখতে পাই ১ নং রেলগেইট এলাকায় রেলের সম্পদ অদৃশ্য কারণে সরকার দলীয় কায়েমি স্বার্থের লোকজনের হাতে মার্কেট করার জন্য তুলে দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের সচেতন নাগরিকদের দাবি ছিল রেলের এ জায়গা জনস্বার্থে ব্যবহার করা হোক। সরকার সেখানে কর্ণপাত করেনি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান আওয়ামী সরকার গত দুইবার ভোটারবিহীন, রাতের অন্ধকারের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। জনগণের সমর্থনশূন্য এই সরকার লুটপাটকারী দুর্নীতিবাজদের সমর্থনে আবারও ক্ষমতায় আসতে চায়। তাই সরকার রেলওয়েসহ সর্বত্র অবাধ লুণ্ঠনের জায়গা তৈরি করে দিচ্ছে। তাই আজ দাবি উঠেছে আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচন দেয়ার।

নারায়ণগঞ্জ,রেল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত