চাঁদপুর শহরের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন ও ব্যস্ততম সড়ক হচ্ছে, ট্রাক রোডস্থ সড়কটি দীর্ঘ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ এখন চরমে গিয়ে পৌচেছে, এবং এটি যেন এখন মরন ফাঁদে রুপ নিয়েছে। প্রতিদিনই ২/১টি দূর্ঘটনা ঘটে চলছে।
শহরের এ নিউ ট্রাকরোড বহু বছর বড় ধরণের কোন সংস্কার না করায় যান চলাচলতো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলা অনেক মুশকিল হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত এই সড়কে ছোট বড় অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে এ স্থানটি দিয়ে।
কিন্তু পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সড়কটিকে মেরামতের উদ্যোগ না নেয়ার কারণে এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে বর্তমান অবস্থা দেখে তাইই মনে হয়। প্রতিদিনই বেড়ে চলছে জনদুর্ভোগ চরমে। তবে পৌরসভার মেয়র জানালেন এটি সংস্কার তালিকায় রয়েছে। হবে সংস্কার। অপেক্ষা করতে হবে।
সরেজমিন শহরের এ সড়কটিতে গিয়ে দেখা গেল, স্থানীয় ১২নাম্বার ওয়ার্ড কাজী অফিস থেকে শুরু করে বিআইডাবিøউটিএ মোড় পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়কে বড় বড় অসংখ্য গর্ত তৈরী হয়ে আছে সড়কে। সম্প্রতি সময়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ওইসব গর্তে পানি জমে জলাবদ্ধতারও সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়ও বছর জুড়ে যে কোন সময় বৃষ্টি হলে সড়কটিতে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।
রাস্তায় জমানো পানি যানবাহন যাওয়ার সময় নোংরা ও কাঁদা মিশ্রিত পানে পথচারিদের শরীরে এসে পড়ে কাপড় নস্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক ধর্মপ্রান মুসলিম কাপড় নস্টের কারনে নামাজ পড়তে পাড়ছেন না। এখন সব মিলিয়ে সড়কটি এখন যেন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা কুদ্দুছ মিয়া জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সড়ক ও মহল্লার সংযোগ সড়ক থেকে শত শত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু সড়কের এই বেহাল অবস্থার কারণে পায়ে হেঁটে চলাও অসম্ভব হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীদের পোষাক নষ্ট হয়ে যায় কাঁদা পানিতে। যানবাহন চলাচলের সময় ময়লা পানি এসে শরীর যেন হয়ে পড়ে অপবিত্র।
একাধিক রিকশা চালাক জানান, বহু বছর এই সড়কটি মেরামত করা হয়নি। যে কারণে ছোট যানবাহন চলাচলের সময় আতংকের মধ্যে থাকতে হয়। কোন সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও আমরা এই সড়কে ভাড়া নিয়ে আসতে চাই না।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আলম খান জানান, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মালবাহী ট্রাক চলে প্রত্যেক ট্রাক থেকে পৌরসভা টোল আদায় করে। এছাড়াও পৌরসভার জন্য এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
কারণ দিনের বেলায় শহরের মূল সড়ক দিয়ে বড় বড় ট্রাকগুলো না গিয়ে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। ট্রাক রোডের গুরুত্ব কোন অংশই কম নয়। পৌর কর্তৃপক্ষ সড়কটি মজবুত ভাবে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া দরকার। বৃষ্টির পরে অনেক সময় ইটের গুড়া দিয়ে বড় বড় গর্ত ঠিক করা হয়। কিন্তু এক বৃষ্টিতে আবার পূর্বের অবস্থার সৃষ্টি হয়।
এই সড়কের বটতলা এলাকার স্টেশনারী ও মুদি ব্যবসায়ী হারুন মিয়া জানান, বৃষ্টি এলে এই সড়কে জলাবদ্ধতা এবং বৃষ্টি না থাকলে যানবাহন চলতে গিয়ে ধুলাবালি এসে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালপত্র নষ্ট হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর পর দোকান পরিস্কার করতে হয়। এছাড়া এই সড়কের ট্রাকঘাট থেকে ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবসায়ীরা তাদের পন্যগুলো ২৪ ঘন্টা এই সড়ক দিয়ে পরিবহন করেন। বার বার অর্থ ব্যয় করার চাইতে সড়কটি মজুবত করে সংস্কার করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর মো. ইউনুছ শোয়েব জানান, আমি নিজেও এই সড়ক দিয়ে চলাচল করি। আমার সাধ্যমত গর্তগুলো মেরামত করে রাখার চেষ্টা করি। পৌরসভার উন্নয়ন পান্ডে টাকা হলে অবশ্যই সড়কটি মেরামত করে দেওয়া হবে।
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, প্রতিযোগিতামূলক শহরের যেসব এলাকায় উন্নয়ন করার প্রয়োজন সেখানে আমরা কাজ করছি। শহরের কয়েকটি সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে। ট্রাকরোডের অবস্থাও আমার জানা আছে। ট্রাক রোড মেরামতের বিষয়টিও আমাদের সংস্কার তালিকায় রয়েছে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে গত দুই বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে শহরের সকল রাস্তার কাজই পর্যাক্রমে করার চেস্টা অব্যাহত আছে।